Berger Paint

ঢাকা, শুক্রবার   ০৯ জুন ২০২৩,   জ্যৈষ্ঠ ২৬ ১৪৩০

ব্রেকিং:
চট্টগ্রাম, গাজীপুর, কক্সবাজার, নারায়ানগঞ্জ, পাবনা, টাঙ্গাইল ও ময়মনসিংহ ব্যুরো / জেলা প্রতিনিধি`র জন্য আগ্রহী প্রার্থীদের আবেদন পাঠানোর আহ্বান করা হচ্ছে। শিক্ষাগত যোগ্যতা- স্নাতক, অভিজ্ঞদের ক্ষেত্রে শিক্ষাগত যোগ্যতা শিথিল যোগ্য। দৈনিক প্রতিদিনের চিত্র পত্রিকার `প্রিন্ট এবং অনলাইন পোর্টাল`-এ প্রতিনিধি নিয়োগ পেতে অথবা `যেকোন বিষয়ে` আর্থিক লেনদেন না করার জন্য আগ্রহী প্রার্থীদের এবং প্রতিনিধিদের অনুরোধ করা হল।
সর্বশেষ:
মেসির অভিষেক ম্যাচের টিকিটের দাম ১০ লাখ টাকা! জেলায় জেলায় বিদ্যুৎ অফিসের সামনে বিএনপির অবস্থান পোশাক কারখানায় উৎপাদন ব্যাহত, রেশনিং পদ্ধতিতে লোডশেডিংয়ের পরামর্শ ভারতীয় পেঁয়াজ পৌঁছতেই দেশি পেঁয়াজ ৪০ টাকায় বিক্রি দুই মাসে হিট স্ট্রোকে ২০ জনের মৃত্যু: দুর্যোগ ফোরাম এইচএসসি পরীক্ষা শুরু ১৭ আগস্ট, রুটিন প্রকাশ

সাতক্ষীরার চিকিৎসা সেবার বেহালদশা

এম,এ মামুন, সাতক্ষীরা

প্রকাশিত: ১১ সেপ্টেম্বর ২০২০  

ছবি- সংগৃহীত

ছবি- সংগৃহীত

 

সাতক্ষীরার মেডিকেল কলেজ ও সদর হাসপাতালের চিকিৎসা ব্যবস্থার বেহালদশা। প্রাণঘাতী করোনা মহামারীর এই দুঃসময়ে করোনার চিকিৎসার পথ সুগম করতে সার্জিক্যাল সহ সাধারণ রোগীরা পাচ্ছে না চিকিৎসা সেবা। কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা প্রতিটি হাসপাতালে বিশেষ করে মেডিকেল কলেজগুলোতে পৃথক করোনা ইউনিটে করোনা রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিতে হবে এবং অন্যান্য রোগীদেরও চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে হবে। হাসপাতালগুলোকে অর্ধেক করোনা এবং অর্ধেক সাধারন রোগীর চিকিৎসা, ভর্তি, অপারেশন এর সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা থাকলেও সাতক্ষীয় সেটি মানা হচ্ছে না। পাঁচশত বেডের মেডিকেল কলেজ হাসপতালে কেবলমাত্র করোনা ও করোনা উপসর্গ নিয়ে আসা রোগীদের চিকিৎসা ও ভর্তি করা হচ্ছে। সাতক্ষীরার মেডিকেলে বর্তমানে করোনা ও করোনা উপসর্গ নিয়ে ভর্তিসহ চিকিৎসা নিচ্ছেন পঞ্চাশজন রোগী, অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি, চিকিৎসা ব্যবস্থা সমৃদ্ধ সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জেলার বাইরে খুলনা, যশোর সহ অন্যান্য জেলা হতে রোগীরা আসতে শুরু করেছিল, কিন্তু বাস্তবতা হলো সাতক্ষীরার বিশ লক্ষাধীক মানুষ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সামান্যতম চিকিৎসা পাচ্ছে না।

 

সরকার কোটি কোটি টাকা ব্যয় করছে সাতক্ষীরা মেডিকেলে,উদ্দেশ্য জনস্বাস্থ্য রক্ষা এবং চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করা। কিন্তু চিকিৎসা সেবা হতে বঞ্চিত হচ্ছে রোগীরা। বিস্ময়, হতাশা, উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা সেই সাথে চরম অসহায়ত্বের মুখোমুখি সাতক্ষীরার রোগীরা। মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কর্মরত চিকিৎসক এবং নার্সদের একটি অংশ করোনা কাল কে পুজি করে দায় দায়িত্ব, কর্তব্য এবং দায়িত্ববোধকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখাচ্ছে। তথ্যানুসন্ধানে জানাগেছে করোনার দোহাই দিয়ে চিকিৎসকদের অনেকে মেডিকেলে চিকিৎসা সেবা (আউটডোর) না দিলেও বাইরে অর্থাৎ নিজস্ব চেম্বারে ও ক্লিনিকে দেদারছে রোগী দেখছেন। নিজস্ব চেম্বার বা ক্লিনিকে রোগী দেখা স্বাভাবিক এ বিষয়ে বিতর্ক না থাকলেও বিতর্ক এবং দায়িত্বহীনতার পাহাড় জমছে ক্ষোভ, হতাশা ছড়িয়ে পড়ছে সরকারি দায়িত্ব পালন না করায়, নিজ প্রতিষ্ঠানে রোগী না দেখা। অন্ততঃ চারমাস যাবৎ সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আউটডোর বন্ধ, সব কিছু চলছে করোনার দোহাই দিয়ে, মানবতা, মানবিকতা, রোগী আর্থিক সঙ্গতি, মুমুর্ষতা সব কিছু যেন অধোরা, অপ্রয়োজনীয় এমনও অভিযোগ উঠছে দায়িত্ব পালনকারী সময়ে (কর্মঘন্টা) ও চিকিৎসকরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে উপস্থিত না থেকে ক্লিনিকে সময় দিচ্ছে।

 

আউটডোরে এবং জটিল, কঠিন রোগে আক্রান্ত মেডিকেলে এসে চিকিৎসা না পেয়ে ভর্তি হতে না পেরে বিভিন্ন ইউনিট ঘরে অভিজ্ঞতা এমন যে যার কাজে ব্যস্ত, নার্সদের কেউ কেউ ফেস বুক দেখে অলস সময় কাটাচ্ছে। সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজের রুগ্ন, বিপন্ন এবং ভেঙ্গে পড়া চিকিৎসা ব্যবস্থাই কেবল শেষ কথা নয়, সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের অবস্থাও অতি শোচনীয়। জরুরী বিভাগে কর্মরতরা যতটা দায়িত্ব পালনে আন্তরিক সে অপেক্ষা অধিকতর সতর্কতা এবং সাবধানতা অবলম্বন করছে করোনাকে নিয়ে। করোনায় সাবধানতা, সতর্কতার বিকল্প নেই যথাযথ কিন্তু গ্রাম হতে আগত রোগীদেরকে করোনা সাবধানতা বা সতর্কতা জানান দেওয়া অপেক্ষা তাদের কেউ কেউ এমন আচরন করে বলেছেন অসহায় রোগীরা হাসপাতালের জরুরী বিভাগে অবস্থান করা এবং চিকিৎসা নেওয়া, ভর্তি হওয়া অস্বস্তির এবং বিরক্তের কারনে পরিনত হচ্ছে। সদর হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা সিভিল সার্জনের আন্তরিকতার ঘাটতি না থাকলেও হাসপাতালটিতে দীর্ঘদিন যাবৎ কোন প্রকার অপারেশন হচ্ছে না। একজন মাত্র সার্জিক্যাল ডাক্তার আবার তিনি কালে ভাদ্র সদর হাসপাতালে আসেনা। নেই কোনো শিশু বিশেষজ্ঞ, হাসপাতালটিতে চিকিৎসক সংকট থাকলেও বর্তমান চিকিৎসক বা অধিকতর আন্তরিক হলে সদর হাসপাতাল সুচিকিৎসার কেন্দ্রে পরিনত হতো, মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও সদর হাসপাতাল সরকারি বরাদ্দ, ঔষধ এর সরবরাহ স্বাভাবিক এসবের কোন কমতি নেই। কিন্তু কোন চিকিৎসা নেই। তাহলে ঔষধ কি হচ্ছে, অন্যান্য সেবার বরাদ্দ বিষয় তদন্ত হওয়া জরুরী।

 

মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দীর্ঘ চার মাসের ব্যবধানে চলতি মাসের তিন তারিখে করোনা উপসর্গ নিয়ে ভর্তি হওয়া মেজবাহ নামের এক রোগীর সার্জিক্যাল অপরেশন করেছেন ডাঃ শরিফুল ইসলাম। রোগীর আত্মীয়স্বজনরা জানান ডাঃ শরিফুল ইসলাম সফল ভাবে অপারেশন করেছেন। করোনার সময়কালকে পুজি করে মেডিকেল কলেজ হাসপাতালেও সদর হাসপাতালের চিকিৎসা ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়ার এই দুঃসময়ে বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও প্রাইভেট প্রাকটিস করা চিকিৎসকদের জমজমাট ব্যবসা গরীব, অসহায় রোগীদেরকে আর্থিক সংকটে ফেলছে এবং কোন কোন ক্ষেত্রে অধিক অর্থ ব্যয় হলেও সুচিকিৎসা পাচ্ছে না। সকাল হতে গভীর রাত পর্যন্ত ক্লিনিক গুলোতে রোগীদের ব্যপক উপস্থিতি, চিকিৎসকদের বিরামহীন চিকিৎসা সেবা প্রদান, অর্থ উপার্জন সব কিছু ঠিকঠাক চললেও সরকারি চিকিৎসা হতে বঞ্চিত রোগীরা। সদর হাসপাতালের চিকিৎসকরা করোনা টেস্ট ব্যতিত রোগী দেখা বা অপারেশনে অপরাগতা প্রকাশ করলেও ক্লিনিক গুলোতে অপারেশন করছেন দেদারছে। করোনা টেস্ট বা নেগেটিভ নিশ্চয়তা প্রয়োজন পড়ছে না এমন তথ্য এসেছে অনুসন্ধানে। চিকিৎসা সেবা বঞ্চিত হওয়ার এই মহাসংকটময় বিষয়ে জানতে চাইলে মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাঃ রফিকুল ইসলাম জানান আমরা অতি দ্রুত করোনার পাশাপাশি অন্যান্য চিকিৎসা সেবা প্রদানের লক্ষে অগ্রসর হচ্ছি, এবং আউটডোরের ব্যবস্থা ও শুরু পদক্ষেপ নিচ্ছি। সিভিল সার্জন হোসাইন সাফায়াত জানান আমাদের চিকিৎসক সংকট সেই সাথে করোনা নেগেটিভ এর বিষয়ে অপারেশনের ঘাটতি, তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন কেউ কেউ হাসপাতালে অপারেশন না করলেও বাইরে করছেন। কর্তৃপক্ষকে চিকিৎসক নিয়োগের বিষয়ে তিনি পত্র লিখেছেন। তিনি আরও বলেন উন্নত এবং যথাযথ চিকিৎসা সেবা দেওয়ার আন্তরিকতার সামান্যতম ঘাটতি নেই। তিনি সকলের সহযোগিতা কামনা করেন। সাতক্ষীরার মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল জেলা বাসির স্বপ্ন, আস্থা আর নির্ভরতার প্রতিক, অথচ সেই আস্থা ও আশ্রয়স্থল, সেবা যদি জনগনের জন্য কেবেল মাত্র প্রতিকি হয়, স্থাপনায় পরিনত হয় তা যেমন দুঃখ জনক অনুরুপ সরকারের লক্ষ্য উদ্দেশ্য, স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করনের পরিপন্থী।

এই বিভাগের আরো খবর