Berger Paint

ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২৩ মার্চ ২০২৩,   চৈত্র ৮ ১৪২৯

ব্রেকিং:
চট্টগ্রাম, গাজীপুর, কক্সবাজার, নারায়ানগঞ্জ, পাবনা, টাঙ্গাইল ও ময়মনসিংহ ব্যুরো / জেলা প্রতিনিধি`র জন্য আগ্রহী প্রার্থীদের আবেদন পাঠানোর আহ্বান করা হচ্ছে। শিক্ষাগত যোগ্যতা- স্নাতক, অভিজ্ঞদের ক্ষেত্রে শিক্ষাগত যোগ্যতা শিথিল যোগ্য। দৈনিক প্রতিদিনের চিত্র পত্রিকার `প্রিন্ট এবং অনলাইন পোর্টাল`-এ প্রতিনিধি নিয়োগ পেতে অথবা `যেকোন বিষয়ে` আর্থিক লেনদেন না করার জন্য আগ্রহী প্রার্থীদের এবং প্রতিনিধিদের অনুরোধ করা হল।
সর্বশেষ:
শি-পুতিনের আনুষ্ঠানিক বৈঠক আজ মুগদায় গ্যাস নেওয়ার সময় ট্রাকের সিলিন্ডার বিস্ফোরণে যুবকের মৃত্যু ঢাকাসহ ১৯ জেলায় ৬০ কিমি বেগে ঝড়বৃষ্টির পূর্বাভাস ট্রাম্পকে গ্রেফতার করা হতে পারে আজ আরাভকে খুঁজছে দুবাই পুলিশ

বান্দরবানে আদিবাসী কিশোরী মেয়েকে ধর্ষণের প্রতিবাদে মানববন্ধন

তপু ত্রিপুরা

প্রকাশিত: ৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০  

ছবি-প্রতিদিনের চিত্র

ছবি-প্রতিদিনের চিত্র

লামায় আদিবাসী কিশোরী ধর্ষণের পর হত্যার প্রতিবাদ ও ন্যায় বিচারের দাবিতে আজ বৃহস্পতিবার সকালে জাতীয় জাদুঘরের সামনে এক মানববন্ধন করেছে বাংলাদেশ আদিবাসী নারী নেটওয়ার্ক, বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘ ও হিল উইমেন্স ফেডারেশন।

বাংলাদেশ আদিবাসী নারী নেটওয়ার্ক-এর সমন্বয়কারী ফাল্গুনী ত্রিপুরার সভাপতিত্বে এবং চঞ্চনা চাকমার  সঞ্চালনায় মানববন্ধনে সংহতি প্রকাশ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ড. রোবায়েত ফেরদৌস, বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘের নির্বাহী পরিচালক রোকেয়া কবির, কবি ও সাংবাদিক সোহরাব হাসান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. জোবাইদা নাসরীন কনা, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের পরিচালক এ্যাড. জনা গোস্বামী, কাপেং ফাউন্ডেশনের প্রতিনিধি খোকন সুইটেন মুর্মু এবং বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের প্রতিনিধি মনিরা ত্রিপুরাসহ অন্যান্য সংগঠনের প্রতিনিধিবৃন্দ।

মানববন্ধনের লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘের উপ-পরিচালক শাহনাজ সুমী। তিনি বলেন, গত ৩১ জানুয়ারি ২০২০ বান্দরবান লামা উপজেলার সংলগ্ন কক্সবাজার চকরিয়ার হেব্রেম মিশনারী চত্বরে নবম শ্রেনীর এক শিক্ষার্থী ধর্ষণের শিকার হন। তিনি বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন কারণে আদিবাসী নারীসহ নারীর উপর সহিংসতার মাত্রা উদ্বেগজনকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। পার্বত্য চট্টগ্রাম সমস্যা সমাধান এবং পার্বত্য অধিবাসীদের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ১৯৯৭ সালে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি সাক্ষরিত হওয়ার পরও চুক্তিটি যথাযথ ও পূর্ণাঙ্গভাবে বাস্তবায়িত না হওয়ার ফলে বিশেষত সেটেলার বাঙালি ও নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের দ্বারা বহু জুম্ম নারী যৌন নিপীড়ন ও সহিংসতার শিকার হয়েছেন। কাপেং ফাউন্ডেশনের প্রতিবেদন অনুসারে ২০১৯ সালে প্রায় ৩৩ জন আদিবাসী নারী ও কন্যাশিশু সহিংসতার শিকার হয়েছে। শুধুমাত্র ২০১৮ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত আদিবাসী নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে মোট ৪৫টি (সমতলে ২১টি এবং পার্বত্য চট্টগ্রামে ২৪)। ৪৫টি ঘটনায় কমপক্ষে ৫২ জনের অধিক আদিবাসী নারী ও মেয়েশিশু যৌন বা শারীরিকভাবে আক্রমণের শিকার হয়। এর মধ্যে ধর্ষণের শিকার কমপক্ষে ১৮ জন আদিবাসী নারী, ১২ জনকে ধর্ষণের পর হত্যা এবং ১৩ জন নারীকে শ্লীলতাহানি বা ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়। বলা যায়, প্রতিমাসেই আদিবাসী নারীরা কোন না কোন নির্যাতনের শিকার হচ্ছেই। মূলত বিচারহীনতার সংস্কৃতির কারণে এধরনের ঘটনা বারংবার ঘটছে। দুঃখের বিষয় হলো, তবুও এ বিষয়ে আমরা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোন ইতিবাচক পদক্ষেপ লক্ষ্য করছি না।
কিন্তু এসমস্ত সহিংস ঘটনার জন্য রাষ্ট্র, সরকার, বিচার বিভাগ, প্রশাসন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী ও নিরাপত্তা বাহিনী কেউ এর দায়-দায়িত্ব এড়াতে পারে না। রাষ্ট্র , সরকার বা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকেই ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে হবে। বস্তুত পার্বত্য চট্টগ্রাম সমস্যার সুষ্ঠু সমাধানের লক্ষে স্বাক্ষরিত পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি যথাযথ ও পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়িত না হওয়া ও চুক্তির আলোকে এখনও পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রশাসন কার্যকর না হওয়ার কারণে পাহাড়ের
আদিবাসী নারীর উপর নির্যাতন-নিপীড়ন, হত্যা, ধর্ষণ, অপহরণ ইত্যাদি এখনো অব্যাহত রয়েছে। এ অবস্থা থেকে উত্তোরণের জন্যে ও নারীর প্রতি সহিংসতা রোধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ প্রশাসনকেই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে বলে আমরা মনে করি। সেই সাথে পার্বত্য চট্টগ্রামের জন্যে যেহেতু আলাদা মন্ত্রণালয় রয়েছে তাই পার্বত্য নারীদের প্রতি সহিংসতা রোধের জন্য পার্বত্য মন্ত্রণালয়ের বিশেষ দৃষ্টি ও পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য অনুরোধ করছি।

মানববন্ধনে সংগঠনগুলোর পক্ষে ৫টি দাবিনামা পেশ করা হয়। দাবি সমূহ হচ্ছে -বান্দরবানের লামায় আদিবাসী কিশোরী ধর্ষণসহ সারাদেশে আদিবাসী নারীদের উপর সহিংসতার  দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে হবে, ঘটনার শিকার পরিবারকে পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণসহ নিরাপত্তা প্রদান করতে হবে, আদিবাসী নারীসহ নারীর প্রতি সকল ধরনের নির্যাতন বন্ধে প্রশাসনের কার্যকর ভূমিকা রাখতে হবে, পার্বত্য চট্টগ্রাম মন্ত্রণালয়ের অধীনে পার্বত্য নারীদের সকল ধরনের নির্যাতনের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণের জন্যে একটি বিশেষ সেল গঠন করতে হবে এবং অবিলম্বে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির পূণার্ঙ্গ বাস্তবায়ন করতে হবে।

 

এই বিভাগের আরো খবর