বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বাংলাদেশের স্বাধীনতা
মুকুল কান্তি ত্রিপুরা
প্রকাশিত: ১৭ মার্চ ২০২০

ছবি-সংগৃহীত
বঙ্গবন্ধু একটি আবেগের নাম, একটি ইতিহাস, একটি অনুপ্রেরণা এবং মহান মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত চেতনার নাম। আজ এই অবিসংবাদিত নেতার জন্মশত বার্ষিকীতে প্রিয় নেতাকে জানাই শুভ জন্মদিন ও বিনম্র শ্রদ্ধা। ১৯২০ সালের আজকের এই দিনে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তাঁর জীবনের প্রতিটি সময় ছিল এক একটি সংগ্রামী ইতিহাস। বাংলাদেশ নামক একটি স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পুরো পটভূমি জুড়ে তিনিই ছিলেন মূল প্রতীক। বাংলার মানুষকে পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে মুক্ত হয়ে স্বাধীনতার স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন এই বীরপুরুষ। বিশ্বের মানচিত্রে ১৯৭১ সালে ‘বাংলাদেশ’ নামক যে একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের জন্ম হয়েছিল, তাও এই সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাত ধরে।
বঙ্গবন্ধু শুধু দেশের অভ্যন্তরেই জননন্দিত নেতা নন, তিনি বিশ্ব রাজনীতির ইতিহাসেরও এক ধ্রুবতারা এবং উজ্জল নক্ষত্র। শেখ মুজিব বিশ্ব মানবতার প্রতীক, মুক্তিকামী-স্বাধীনতাকামী ও নিপীড়িত-নির্যাতিত মানুষের শোষণ-বঞ্চনার বিরুদ্ধে এক অবিনাশী আলোকবর্তিকা। তাই কিউবান রাজনৈতিক নেতা ও সমাজতন্ত্রী বিপ্লবী ফিদেল কাস্ট্রো বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে বলেছিলেন- “আমি হিমালয় দেখিনি কিন্তু শেখ মুজিবকে দেখেছি। ব্যক্তিত্ব এবং সাহসিকতায় তিনিই হিমালয়।” বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুতেও তিনি আফসোস করে বলেছিলেন-“শেখ মুজিবের মৃত্যুতে বিশ্বের শোষিত মানুষ হারাল তাদের একজন মহান নেতাকে, আমি হারালাম একজন অকৃত্রিম বিশাল হৃদয়ের বন্ধুকে।”বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পুরো জীবনটাই ছিল নিপীড়িত, নির্যাতিত, শোষিত, বঞ্চিত মানুষের মুক্তির পথ খোঁজে বেড়ানো। সাম্রাজ্যবাদ, উপনিবেশবাদ, পুঁজিবাদ ও সামন্তবাদের বিরুদ্ধে তাঁর লড়াই ছিল অনবদ্য। রাজনৈতিক দর্শন ছিল পূর্ণ স্বাধীনতামুখী। তাই দেশের তৎকালীন সাড়ে সাতকোটি মুক্তিকামী মানুষ তাঁর সংগ্রামী চেতনায় উদ্বোদ্ধ হয়ে অংশগ্রহণ করেছিলেনং মহান মুক্তিযুদ্ধে এবং তার ফলাফল ছিল ‘বাংলাদেশ’ নামক একটি স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা। তাইতো তিনি আজ ধন্য, গোটা বাংলাদেশ ধন্য। তাই কবি শামসুর রাহমানও তাঁর ‘ধন্য সেই পুরুষ’ কবিতার খন্ডাংশে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে লিখেছেন-
“ধন্য সেই পুরুষ, যাঁর নামের ওপর রৌদ্র ঝরে
চিরকাল, গান হয়ে
নেমে আসে শ্রাবণের বৃষ্টিধারা; যাঁর নামের ওপর
কখনো ধুলো জমতে দেয় না হাওয়া,
ধন্য সেই পুরুষ, যাঁর নামের উপর পাখা মেলে দেয়
জ্যোৎস্নার সারস,
ধন্য সেই পুরুষ, যাঁর নামের ওপর পতাকার মতো
দুলতে থাকে স্বাধীনতা,
ধন্য সেই পুরুষ, যাঁর নামের ওপর ঝরে
মুক্তিযোদ্ধাদের জয়ধ্বনি।”
জাতির পিতার রাজনৈতিক জীবনও ছিল বেশ বর্ণাঢ্য। বাগ্মীতা ছিল অসাধারণ। একজন ত্যাজী, দুর্দান্ত সাহসী এবং অসাধারণ ব্যক্তিত্বের অধিকারী এই নেতা মূলত ছাত্র জীবন থেকেই তাঁর রাজনৈতিক জীবন শুরু করেছিলেন। ১৯৩৯ সালে মিশনারি স্কুলে পড়ার সময় স্কুল পরিদর্শনে এসেছিলেন তদানীন্তন বেঙ্গল প্রেসিডেন্সির মুখ্যমন্ত্রী শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক এবং এসেছিলেন হোসেন শহীদ সোহ্রাওয়ার্দী। তিনি স্কুলের ছাদ সংস্কারের দাবীর উপর ভিত্তি করে একটি দল নিয়ে ছুটে যান তাঁদের কাছে এবং ঐ দলের নেতৃত্বও প্রদান করেছিলেন তিনি। পরবর্তীতে সোহরাওয়ার্দীর সাথে কলকাতায় নিয়মিত যোগাযোগ শুরু হয় এবং ১৯৩৯ সালে গোপালগঞ্জ মুসলিম ছাত্রলীগ ও মুসলীম লীগ গঠন হলে শেখ মুজিব সাধারণ সম্পাদক হন। ১৯৪০ সালে নিখিল ভারত মুসলিম ছাত্র ফেডারেশনে যোগ দিয়ে সাংগঠনিকভাবে রাজনীতিতে সক্রিয় হয়ে উঠেন তিনি। তিনি ১৯৪৩ সালে ‘বেঙ্গল মুসলিম লীগ’ এ যোগ দিলে একই বছর বঙ্গীয়মুসলিম লীগের কাউন্সিলর নির্বাচিত হন।তিনি কলকাতায় পড়াশোনা করার সময় কলকাতায় বসবাসকারী ফরিদপুরবাসীদের কল্যানের জন্য প্রতিষ্ঠিত ‘ফরিদপুর ডিস্ট্রিক্ট এসোসিয়েশন’এর সেক্রেটারি মনোনীত হন। এর দুই বছর পর নির্বাচিত হনইসলামিয়া কলেজ ছাত্র ইউনিয়নের মহাসচিব পদে। পরবর্তীতে ১৯৪৭ সালে ধর্মীয় কারণে পৃথক হয়ে যায় পাকিস্তান-ভারত। তখন শেখ মুজিব পূর্ব পাকিস্তানে ফিরে এসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগে ভর্তি হন এবং ১৯৪৮ সালের জানুয়ারি ৪ তারিখে প্রতিষ্ঠা করেন ‘পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগ’। এভাবে বঙ্গবন্ধু হয়ে উঠেন তুখোড় ছাত্রনেতা এবং শুরু করেন পশ্চিম পাকিস্তানী শাসক গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে তীব্র আন্দোলন। মূলত কেন্দ্র ও প্রদেশ গুলোতে ক্ষমতা বন্টনের সমস্যা, গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার অনুপস্থিতি, সামরিক শাসনের প্রভাব, পূর্ব বাংলা তথা পূর্ব পাকিস্তানের প্রতি পশ্চিম পাকিস্তানের বৈষম্যমূলক দৃষ্টিভঙ্গি যখন প্রকট আকার ধারণ করে তখন এই ছাত্রনেতা রচনা করতে থাকেন প্রতিবাদ মূখর জীবন। আর হয়ে উঠেন বাংলাদেশ নামক স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পূর্ব পর্যন্ত ঐতিহাসিক বিভিন্ন আন্দোলন সাংগ্রামের নেতৃত্ব প্রদানকারী আপামর জনসাধারণের প্রিয় নেতা।
পাকিস্তান নামক রাষ্ট্র সৃষ্টি হওয়ার পর থেকেই পাকিস্তানের সংখ্যাগরিষ্ঠ ভাষা বাংলাকে রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা প্রদানের জন্য যে আন্দোলন শুরু হয়, সেখানেও নেতৃত্ব পর্যায়ে ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। প্রথমে ১৯৪৮ সনের ফেব্রয়ারি ২৩ তারিখে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী খাজা নাজিমউদ্দিন গণ-পরিষদের অধিবেশনে উর্দুকে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা প্রতিষ্ঠার ঘোষণা প্রদান করলে গণপরিষদের সদস্য ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত পাকিস্তান গণপরিষদে ইংরেজি ও উর্দুর পাশাপাশি সদস্যদের বাংলায় বক্তৃতা প্রদান এবং সরকারি কাজে বাংলা ভাষা ব্যবহারের জন্য সংশোধনী প্রস্তাব আনেন। তখন পূর্ব পাকিস্তানের সদস্যগণ তাঁর প্রস্তাবে সমর্থন জানালেও মুসলিম লীগের সদস্যগণ এর বিরোধিতা করেন। তীব্র প্রতিবাদে ফেটে পড়ে সমগ্র বাংলার মানুষ। প্রতিবাদী শেখ মুজিব অবিলম্বে মুসলিম লীগের এই পূর্ব পরিকল্পিত সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করেন। জাতির পিতা তাঁর অসমাপ্ত আত্মজীবনী গ্রন্থের ৯২ পৃষ্ঠায় লিখেছিলেন- “সভায় ১৯৪৮ সালের ১১ই মার্চকে ‘বাংলা ভাষা দাবি’ দিবস ঘোষণা করা করা হল। জেলায় জেলায় আমরা বের হয়ে পড়লাম। আমি ফরিদপুর, যশোর হয়ে দৌলতপুর, খুলনা ও বরিশালে ছাত্রসভা করে ঐ তারিখের তিন দিন পূর্বে ঢাকায় ফিরে এলাম।” আন্দেলন বেগবান হয় যখন মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ পূর্ব বাংলায় এসে বক্তৃতা প্রদান করেন। ১৯৪৮ সালের ১৯ মার্চ গভর্ণর জেনারেল মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ ঢাকায় এসে ২১ মার্চ ঢাকার তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমান নাম সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) এবং ২৪ মার্চ ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে বক্তব্য প্রদান করেছিলেন। তিনি ২১ মার্চ ঢাকার তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে বক্তৃতায় বলেন “Let me make it very clear to you, it is no doubt that the state language of Pakistan is going to be Urdu and no other language. Anyone who tries to mislead you is really the enemy of Pakistan. Without one state language, no nation can remain tied up solidly together and function. Look at the history of other countries. Therefore, so far as the state language is concerned, Pakistan’s stae language shall be Urdu.” । তখন ভাষা নিয়ে শঙ্কিত হন এদেশের বাংলা ভাষাভাষী সাধারণ মানুষ। সদস্য স্বাধীনতা প্রাপ্ত পাকিস্তানে তাদের মাতৃভাষা বাংলা রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা পাবে না, তা তারা মেনে নিতে পারেনি। তাই শুরু হয় তুমুল আন্দোলন মায়ের ভাষায় লিখতে, পড়তে, কথা বলতে। এমনই এক আন্দোলনেও বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্ব ছিল অগ্রগণ্য। এই আন্দোলনে তাঁর নেতৃত্বকে দমিয়ে রাখার জন্য পাকিস্তান সরকার তাঁকে বন্দী করেন জেলে। আন্দোলনের শেষ পর্যায়ে ১৯৫২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের ১৪ তারিখ থেকে ২৬ তারিখ পর্যন্ত জেলে থাকা অবস্থায় অনশন করেছিলেন তিনি। বঙ্গবন্ধু তাঁর অসমাপ্ত আত্মজীবনী গ্রন্থের ২০৩ পৃষ্ঠায় লিখেছিলেন- “২১শে ফেব্রæয়ারি আমরা উদ্বেগ, উৎকন্ঠা নিয়ে দিন কাটালাম, রাতে সিপাহিরা ডিউটিতে এসে খবর দিল, ঢাকায় ভীষণ গোলমাল হয়েছে। কয়েকজন লোক গুলি খেয়ে মারা গেছে। রেডিওর খবর। ফরিদপুরে হরতাল হয়েছে, ছাত্র-ছাত্রীরা শোভাযাত্রা করে জেলগেটে এসেছিল। তারা বিভিন্ন স্লোগান দিচ্ছিল, ‘রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই’, ‘বাঙালিদের শোষণ করা চলবে না’, ‘শেখ মুজিবের মুক্তি চাই’, ‘রাজবন্দিদের মুক্তি চাই’, আরো অনেক স্লোগান।”২১ শে ফেব্রুয়ারি সরকারের ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে সালাম, রফিক, বরকত ও জব্বারসহ অনেকেই জীবন উৎসর্গ করলে পাকিস্তান সরকার বাংলাকে রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা দিতে বাধ্য হয়। এই ভাষা আদোলনে আত্মোৎসর্গকৃত শহিদদের স্মরণে প্রথম কবিতা লেখেন আব্দুল গাফফার চৌধুরী। যা পরবর্তীতে গান আকারে গাওয়া হয়েছিল। গানটি হলো- “আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি আমি কি ভূলিতে পারি।”
এদিকে ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন টিকাটুলির কে এম দাশ লেনে অবস্থিত রোজ গার্ডেন হলে এক রাজনৈতিক কর্মী সমম্মেলনে সর্বসম্মতিক্রমে মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীকে সভাপতি, টাঙ্গাইলের শামসুল হককে সাধারণ সম্পাদক এবং শেখ মুজিবুর রহমানকে অন্যতম যুগ্ম সম্পাদক করে ‘পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ’ গঠিত হলেশেখ মুজিব নব প্রতিষ্ঠিত সংগঠনের নেতৃত্ব পর্যায়ের একজন হয়ে অত্যন্ত বিচক্ষণতার সাথে দায়িত্ব পালন করতে থাকেন। তাকে দলের পূর্ব পাকিস্তান অংশের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকও নির্বাচিত করা হয়।শেখ মুজিব ১৯৫৩ সালে দলের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। সংগঠনটি একটি অসাম্প্রদায়িক ও ধর্মনিরপেক্ষ বিধায় ১৯৫৫ সালের ২১ অক্টোবর সংগঠনের ‘মুসলিম’ শব্দটি বাদ দিয়ে নতুন নামকরণ করা হয় ‘পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগ’ এবং বঙ্গবন্ধুকে পুনরায় দলের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করা হয়।
তাছাড়া পূর্ব বাংলায় পাকিস্তানীদের বৈষম্য ও নিপীড়ন দেখে ১৯৫৪ সালের ৪ ডিসেম্বর বিরোধী দলগুলো একত্রে গঠন করে ‘যুক্তফ্রন্ট’। যুক্তফ্রন্টের অন্তর্ভূক্ত দলগুলো ছিল- ভাসানী-সোহরাওয়ার্দীর নেতৃত্বাধীন ‘পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ’, শেরে বাংলা এ. কে. ফজলুল হকের কৃষক-প্রজা পার্টি, মাওলানা আতাহার আলীর ‘নেজামে ইসলাম’ ও হাজি দানেশের নেতৃত্বাধীন বামপন্থি গণতন্ত্রী দল। ১৯৫৪ সালের ৮ মার্চ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে পূর্ব বাংলায় ২১ দফার নির্বাচনি কর্মসূচী নিয়ে অংশগ্রহণকারী যুক্তফ্রন্ট প্রাদেশিক পরিষদের ৩০৯ টি আসনের মধ্যে যুক্তফ্রন্ট জয়লাভ করে ২৩৭ টি আসনে। বিজয়ের সিংহভাগের অংশীদার হলো আওয়ামী লীগ, অংশীদার হলেন বিজয়ী শেখ মুবিজও, অত্যন্ত দক্ষতার সাথেকৃষি, সমবায়, পল্লী উন্নয়ন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর দায়িত্বও পালন করেন তিনি।তিনি গণপরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন ১৯৫৫ সালের ৫ জুন ।
১৯৫৬ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ মূখ্যমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাৎ করে খসড়া শাসনতন্ত্রে প্রাদেশিক স্বায়ত্তশাসনের বিষয়টি অন্তর্ভূক্তির দাবি জানায়। ৪ সেপ্টেম্বর বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে খাদ্যের দাবিতে মিছিল বের করলে চকবাজার এলাকায় পুলিশ মিছিলে গুলি চালায় এবং ৩ জন নিহত হন। ঐ বছর ১৬ সেপ্টেম্বর বঙ্গবন্ধু কোয়ালিশন সরকারের শিল্প, বাণিজ্য, শ্রম, দুর্নীতি দমন ও ভিলেজ- এইড দপ্তরের মন্ত্রীর দায়িত্ব লাভ করেন।
১৯৫৮ সালের ৭ অক্টোবর পাকিস্তানের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট মেজর জেনারেল ইস্কান্দার মির্জা ও সামরিক বাহিনী প্রধান জেনারেল আইয়ুব খান সামরিক শাসন জারির মাধ্যমে দেশের সকল প্রকার রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ করে দেন এবং ১১ অক্টোবর বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করে একের পর এক মিথ্যা মামলা দায়ের করেন। এভাবে বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করে নানা রকম হয়রানি করতে থাকে পাকিস্তান সরকার। অন্যদিকে ১৯৫৯ সালে আইয়ুব খান শুরু করে দেন ‘মৌলিক গণতন্ত্র’। বঙ্গবন্ধু ১৯৬০ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের লক্ষ্যে কাজ করার জন্য বিশিষ্ট ছাত্র নেতৃবৃন্দদের নিয়ে গঠন করেন ‘স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী পরিষদ’ নামের একটি গোপন সংগঠন। প্রতিটি থানায় এবং মহকুমায় গঠন করেন ‘নিউক্লিয়াস’। ১৯৬২ সালের শিক্ষা আন্দোলনেও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অগ্রণী নেতৃত্ব প্রদান করেছিলেন। একই বছর বঙ্গবন্ধু আইয়ুব খানের মৌলিক গণতন্ত্র ব্যবস্থার বিরুদ্ধে তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলেন। ১৯৬৩ সালের ৫ ডিসেম্বর হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী অসুস্থ অবস্থায় বৈরুতে ইন্তেকাল করলে বঙ্গবন্ধুসহ আওয়ামী লীগের সকল নেতাকর্মীরা শোকাহত হন। ১৯৬৪ সালের ২৫ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধুর বাসভবনে একটি সভা অনুষ্ঠিত হয় এবং সভায় বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনার পাশাপাশি মওলানা আবদুর রশিদ তর্কবগীশকে আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হরা হয়। ১১ মার্চ বঙ্গবন্ধু যৌথভাবে আন্দোলনের সুবিধার্থে সবাইকে একটি প্লাটফর্মে এনে আন্দোলনের গতিকে আরো বেগবান করার জন্য গঠন করেন সর্বদলীয় সংগ্রাম পরিষদ।
৯৬৬৬ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি লাহোরে বিরোধী দলসমূহের একটি জাতীয়সম্মেলনে শেখ মুজিব তার ঐতিহাসিক ছয়দফা দাবী পেশ করেন যা ছিল কার্যত পূর্ব পাকিস্তানের স্বায়ত্তশাসনের পরিপূর্ণ রূপরেখা। শেখ মুজিব এই দাবীকে আমাদের বাঁচার দাবী শিরোনামে প্রচার করেছিলেন। এই দাবীর মূল বিষয়ছিল একটি দুর্বল কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনে পরিচালিত পাকিস্তানী ফেডারেশনে পূর্ব পাকিস্তানের পূর্ণ স্বায়ত্তশাসন। মূলত, পূর্ব বাংলার জনগণের প্রতি পাকিস্তান রাষ্ট্রের চরম বৈষম্যমূলক আচরণ ও অবহেলার বিরুদ্ধে দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রামের সুস্পষ্ট রূপ ছয়দফা দাবীনামা। এই ছয়দফা দাবীকে বাঙালি জাতির ম্যাগনাকার্টাও বলা হয়ে থাকে। এই দাবী সম্মেলনের উদ্যোক্তারা প্রত্যাখান করেন এবং শেখ মুজিবকে বিচ্ছিন্নতাবাদী হিসেবে চিহ্নিত করেন। এ কারণে তিনি উক্ত সম্মেলন বর্জন করে পূর্ব পাকিস্তানে ফিরে আসেন। আর শুরু করেন ছয় দফা দাবি আন্দোলন । অন্যদিকে ১৯৬৬ সালে মার্চ মাসের এক তারিখে শেখ মুজিব আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হলে তাঁর আন্দোলন সংগ্রামের মোড় ঘুরে যায় অন্যভাবে।
১৯৬৮ সালের প্রথমদিকে পাকিস্তান সরকার শেখ মুজিব এবং আরও ৩৪ জন বাঙালি সামরিক ও সিএসপি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করে যা ইতিহাসে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা নামে সুপরিচিত। মামলায়উল্লেখ করা হয়েছিল শেখ মুজিবসহ এই কর্মকর্তারা ভারতের ত্রিপুরা অঙ্গরাজ্যের অন্তর্গত আগরতলা শহরে ভারত সরকারের সাথে এক বৈঠকে পূর্ব পাকিস্তানকে বিচ্ছিন্ন করার ষড়যন্ত্র করেছে। এতে শেখ মুজিবকে এক নম্বর আসামী করা হয়এবং পাকিস্তান বিভক্তিকরণের এই ষড়যন্ত্রের মূল হোতা হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। কিন্তু এই মিথ্যা মামলা দিয়ে পাকিস্তানী সরকার বঙ্গবন্ধু ও বাংলার মানুষকে দমিয়ে রাখার চেষ্টা করলেও তা সম্ভব হয়নি।
১৯৬৯ সালের জানুয়ারি ৫ তারিখে কেন্দ্রীয়ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ তাদের এগার দফা দাবী পেশ করে যার মধ্যে শেখ মুজিবের ছয়দফার সবগুলো দফাই অন্তর্ভুক্ত ছিল। এই পরিষদের সিদ্ধান্তক্রমে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা প্রত্যাহারের দাবীতে দেশব্যাপী ছাত্র আন্দোলনের প্রস্তুতি গৃহীত হয়। এই সংগ্রাম এক সময়গণ আন্দোলনে রূপ নেয়। এই গণ আন্দোলনই ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান নামে পরিচিত। মাসব্যাপী প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ আন্দোলন, ১৪৪ ধারা ভঙ্গ, কারফিউ, পুলিশের গুলিবর্ষণ এবং বেশ কিছু হতাহতের পর আন্দোলন চরম রূপ ধারণ করলে পাকিস্তান সরকার ছাড় দিতে বাধ্য হয়। তৎকালীন রাষ্ট্রপতি আইয়ুব খান রাজনৈতিক নেতাদের সাথে এক গোলটেবিল বৈঠকের পর এই মামলা প্রত্যাহার করে নেন। এর সাথে শেখ মুজিবসহ অভিযুক্ত সকলকে মুক্তি দেয়া হয়। কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ এই বছরের ২৩ ফেব্রুয়ারি তারিখে শেখ মুজিবের সম্মানে ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) এক সভার আয়োজন করে। লাখো জনতার এই সম্মেলনে শেখ মুজিবকে "বঙ্গবন্ধু" উপাধি প্রদান করা হয়। উপাধি প্রদানের ঘোষণা দিয়েছিলেন তৎকালীন ছাত্রনেতা তোফায়েল আহমেদ। এই সভায় রাখা বক্তৃতায় শেখ মুজিব ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের এগার দফা দাবীর পক্ষে তার পূর্ণ সমর্থন ব্যক্ত করেন।
১৯৭০ সালের ৬ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু পুনরায় আওয়ামী লীগ এর সভাপতি নির্বাচিত হন। একই বছর পাকিস্তান সরকার কর্তৃক ৫ অক্টোবর জাতীয় পরিষদের ও ২২ অক্টোবর প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হলে বঙ্গবন্ধুর নের্তৃত্বাধীন আওয়ামী লীগনির্বাচনে অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে এবং ৭ জুন রেসকোর্স ময়দানের জনসভায় বঙ্গবন্ধু ৬ দফার প্রশ্নে আওয়ামী লীগকে নির্বাচিত করার জন্য জনগণের প্রতি উদাত্ত আহবান জানান। কিন্তু পূর্ব পাকিস্তানে বন্যার কারণে নির্বাচনের তারিখ পিছিয়ে জাতীয় পরিষদের ৭ ডিসেম্বর ও প্রাদেশিক পরিষদের ১৭ ডিসেম্বরনির্বাচনের তারিখ পূনঃ নির্ধারণ করা হয়। তবে উপকূলীয় কিছু অঞ্চলে প্রবল ঘুর্ণিঝরের কারণে ১৯৭১ সালে ১৭ জানুয়ারি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। জাতীয় পরিষদের সর্বমোট আসন সংখ্যা ছিল ৩১৩ টি আর তন্মধ্যে পূর্ব পাকিস্তানে ছিল মোট ১৬৯ টি। এই জাতীয় পরিষদের পূর্ব পাকিস্তানের ১৬৯ টি আসনের মধ্যে আওয়ামী লীগ পায় ১৬৭ টি আসন এবং সর্বমোট ৩১৩ টি আসনের হিসেবেও আওয়ামী লীগ সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে জয়লাভ করে কেননা আওয়ামী লীগের নিকটবর্তী দল পাকিস্তান পিপলস পার্টি পেয়েছিল মাত্র ৮৮ টি আসন। অন্যদিকে পূর্ব পাকিস্তানের প্রাদেশিক পরিষদের মোট আসন সংখ্যা ছিল ৩১০টি। ২ টি আসন সংরক্ষিত থাকায় সাধারণ আসন ছিল ২৯৮ টি এবং নারী আসন ছিল ছিল ১০ টি। তন্মধ্যে আওয়ামী লীগ জয়লাভ করে সাধারণ আসনে ২৮৮ টি ও নারী আসনে ১০ টি সর্বমোট ২৯৮ টি আসন। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগের এইরূপ নির্বাচনী ফলাফল ছিল একটি ঐতিহাসিক অধ্যায়। কেননা এখানেই আওয়ামী লীগ তথা পূর্ব পাকিস্তানের মানুষের অধিকারের ন্যায্যতাপাকাপোক্ত হয়। কিন্তু রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার দোহায় দিয়ে ইয়াহিয়া খান সংসদ ডাকতে দেরি করলে পূর্ব পাকিস্তানের সাধারণ মানুষ বুঝতে পারে যে, মুজিবের দলকে সংখ্যাগরিষ্ঠ হওয়া সত্তেও সরকার গঠন করতে দেয়া হবে না।
ষড়যন্ত্রের বিষয়টি আঁচ করতে পেরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭১ সালের ৩ জানুয়ারি তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে জাতীয় ও প্রাদেশিক পরিষদের সদস্যদের নিয়ে এক শপথ অনুষ্ঠান সম্পন্ন করেন। লক্ষ্য এখন ৬ দফার ভিত্তিতে পাকিস্তানের সংবিধানের খসড়া প্রণয়ন করা। তা বুঝতে পেরে ইয়াহিয়া খান ১ মার্চ এক জরুরী ঘোষণার মাধ্যমে ৩ মার্চ অনুষ্ঠিতব্য জাতীয় পরিষদের অধিবেশন অনির্দিষ্ট কালের জন্য স্থগিত ঘোষণা করা হয়। তখন পূর্ব পাকিস্তানের সমগ্র মানুষ বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডাক দেন অসহযোগ আন্দোলনের। বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে ছাত্রলীগ সভাপতি নূরে আলম সিদ্দিকী, সাধারন সম্পাদক শাজাহান সিরাজ, ডাকসুর ভিপি আ.স.ম. আব্দুর রব, জিএস আব্দুস কুদ্দুস মাখনরা মিলে গঠন করা হয় ‘স্বাধীন বাংলা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ’। ২ ও ৩ মার্চ সারা দেশে পালিত হয় ধর্মঘট। ২ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজিত ছাত্র সমাবেশে ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে উত্তোলন করা হয় বাংলাদেশের মানচিত্র খচিত পতাকা। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে ইয়াহিয়া খান ৬ মার্চ বেতার ভাষণে ২৫ মার্চ পুনরায় জাতীয় পরিষদের অধিবেশন আহবান করে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানে এক বিশাল জনসভায় পরোক্ষভাবে দেশকে স্বাধীন করার ইঙ্গিত দিয়ে শত্রুর মোকাবিলা করার প্রস্তুত থাকার জন্য নির্দেশ প্রদান করলে বাংলার মানুষের মনে স্বাধীনতার স্পৃহা বেড়ে যায়। বঙ্গবন্ধু সেদিন যে বক্তব্য প্রদান করেছিলেন তা ছিল একটি স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার ঘোষণার নামান্তর। বলা যায় তিনি পরোক্ষভাবে সেদিনই স্বাধীনতার ডাক দেন এবং জনগণকে পাকিস্তান শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে সর্বাত্মক অসহযোগ আন্দোলনের জন্য প্রস্তুতির আহবান জানান। এই ভাষণে তিনি স্পষ্টতই জানিয়ে দিয়েছিলেন বাংলার মানুষের স্বাধীনতার তীব্র আকাক্সক্ষার কথা। তাইতো বলেছিলেন- “আজ বাংলার মানুষ মুক্তি চায়, বাংলার মানুষ বাঁচতে চায়, বাংলার মানুষ তার অধিকার চায়”। শুধু তাই নয় তিনি ৭ মার্চের ভাষণে একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ইঙ্গিতও দিয়েছিলেন। অর্থাৎ এদেশ সকলের, কোন নির্দিষ্ট সম্প্রদায়ের দেশ বাংলাদেশ নয়। তাই তিনি ভাষণে বলেছিলেন- “এই বাংলায় হিন্দু মুসলমান বাঙালি অবাঙালি যারা আছে তারা আমাদের ভাই। তাদের রক্ষার দায়িত্ব আপনাদের উপরে।” সর্বোপরি জাতির পিতা এদেশের আপামর জনসাধারণকে উদ্দেশ্য করে বলেছিলেন- “প্রত্যেক গ্রামে, প্রত্যেক মহল্লায় আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে সংগ্রাম গড়ে তোল এবং তোমাদের যা কিছু আছে তাই নিয়ে প্রস্তুত থাকো। মনে রাখবা, রক্ত যখন দিয়েছি, রক্ত আরো দিব। এ দেশের মানুষকে মুক্ত করে ছাড়বো, ইনশাল্লাহ্ । এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম। জয় বাংলা। জয় বাংলা।” বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে দেশজুড়ে ৮ মার্চ থেকে ব্যপক আন্দোলন শুরু হয়। পাকিস্তানীরা ১০ মার্চ ও ১৩ মার্চ পর পর সামরিক আইন জারি করে। কিন্তু কোন কিছুকে তোয়াক্কা না করে বঙ্গবন্ধু ১৪ মার্চ ৩৫ দফা বিশিষ্ট এক নির্দেশনামা জারি করেন। আন্দোলন আরো তীব্র আকার ধারণ করে। ১৬ মার্চ থেকে দফায় দফায় মুজিব-ইয়াহিয়া-ভুট্টোর আলোচনা চলতে থাকে। কিন্তু ১৯ মার্চ জয়দেবপুরের নিরীহ মানুষের উপর পাকিস্তানীরা হমলা ও হত্যাযজ্ঞ চালালে আলোচনা ব্যর্থতায় পর্যবশিত হয় এবং ২৩ মার্চ পাকিস্তানের প্রজাতস্ত্র দিবস উপলক্ষে পূর্ব পাকিস্তানের ঘরে ঘরে পাকিস্তানের পতাকার বদলে স্বাধীন বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়।
ইয়াহিয়া খান সামরিক আইন জারি করেন, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন এবং মুজিবসহ আওয়ামী লীগের অন্যান্য নেতাদের গ্রেফতারের নির্দেশ দেন। পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী রাজনৈতিক ও জনসাধারণের অসন্তোষ দমনে ২৫ মার্চ রাতে পূর্বপরিকল্পিত অপারেশন সার্চলাইট শুরু করে। সেই রাতে পাকিস্তানী বাহিনীর সদস্যরা বাংলার ঘুমন্ত নিরীহ মানুষের উপর নির্বিচারে গুলি চালিয়ে ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের জহুরুল হক হল, জগন্নাথ হল, রোকেয়া হল, মিরপুর, কচুক্ষেত, তেজগাঁও, ইন্ডিরা রোড, মোহাম্মদপুর, ধানমন্ডি, কলাবাগানসহ প্রভৃতি স্থানে নৃসংশভাবে হত্যাযজ্ঞ চালায়। অন্যদিকে এদেশের মানুষও সেদিন থেকে যার যা আছে তা নিয়ে ঝাপিয়ে পড়ে পাকিস্তানীদের উপর। সামরিক বাহিনীর অভিযান শুরু হলে মুজিবুর রহমান ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। তিনি ২৫ মার্চ মধ্যরাতে অর্থাৎ ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে T & T I E.P.R. (বর্তমানে বর্ডার গার্ড অব বাংলাদেশ)এর ওয়্যারলেসের মাধ্যমে ঘোষণা দেন- “This may be my last massage, from today Bangladesh is independent. I call upon the people of Bangladesh wherever you might be and with whatever you have, to resist the army of occupation to the last. Your fight must be go on until the last soldier of Pakistan occupation army is expelled from the soil of Bangladesh and final victory is achieved.” ২৬ মার্চ চট্টগ্রাম স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে এম এ হান্নান বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণা পত্রটি পাঠ করেন এবং ২৭ মার্চ বেতার থেকে বঙ্গবন্ধুর পক্ষে তৎকালীন মেজর জিয়াউর রহমানও ঘোষণা করেন। ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে গ্রেফতার করে পশ্চিম পাকিস্তানীরা এবং ফয়জালাবাদের একটি জেলে কড়া নিরাপত্তায় রাখা হয়। তাজউদ্দিন আহমদ চলে যান ভারতে। ভারতের দিল্লীতে ব্যরিস্টার আমীর-উল ইসলামসহ প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতি ইন্ডিরা গান্ধীর সাথে সাক্ষাৎ করেন এবং স্বাধীন বাংলাদেশে নিরীহ মানুষের উপর পাকিস্তানীদের বর্বর হামলার কথা তুলে ধরেন। এতে ইন্ডিরা গান্ধী সাহায্য করার প্রতিশ্রুতি দেন। তখন ১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে রাষ্ট্রপতি করে একটি সরকার গঠন করা হয় যা ইতিহাসে মুজিবনগর সরকার হিসেবে খ্যাত, যে সরকারের সচিবালয় ছিল কলকাতার ৮ নং থিয়েটার রোডে। সপথ গ্রহণ সম্পন্ন হয় ১৭ এপ্রিল মেহেরপুর জেলার বৈদনাথ তলার আম্রকাননে যাকে পরবর্তিতে নামকরণ করা হয় মুজিবনগর। মুজিবনগরে প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ সরকারের রাষ্টপ্রধান ও সশস্ত্র বাহিনীসমূহের সর্বাধিনায়ক ছিলেন শেখ মুজিবুর রহমান। তার অনুপস্থিতিতে উপরাষ্ট্রপ্রধান সৈয়দ নজরুল ইসলাম অস্থায়ী রাষ্টপ্রধান ও অস্থায়ী সশস্ত্র বাহিনীসমূহের সর্বাধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। মুজিবনগর সরকারের কূটনৈতিক তৎপরতা চালান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তদানীন্তন উপাচার্য আবু সাঈদ চৌধুরীসহ আরো অনেকেই। পুরো বাংলাদেশকে ১১ টি সেক্টরে বিভক্ত করে পরিচালনা করা হয় মুক্তিযুদ্ধ। বাংলার প্রতিটি মানুষের চোখে মুখে স্বাধীনতার স্বপ্ন। নিজের জীবন উৎস্বর্গ করতে প্রস্তুত সকলেই। তবু চাই পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে চির মুক্তি, চাই বেঁচে থাকার পূর্ণ অধিকার। জনমনে স্বাধীনতার তীব্র আকাঙ্খা। তাই মহান মুক্তিযুদ্ধ পরিচালিত হলো নিখুঁতভাবে এবং পরিকল্পিতভাবে। গঠন করা হলো এস ফোর্স, কে ফোর্স, জেড ফোর্স। তাছাড়া নিয়মিত বাহিনীর পাশাপাশি গড়ে তোলা হয় অনিয়মিত বাহিনী। যার যা কিছু আছে তা দিয়ে পাকিস্তানীদের প্রতিহত করার চেষ্টা করা হয়। বাংলার নিরীহ মানুষের উপর পাকিস্তানীদের নির্মম হত্যাযজ্ঞ নাড়া দেয় বিশ্ব বিবেককেও। বাংলাদেশকে বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করতে থাকে ভারত, সোভিয়েত ইউনিয়নসহ আরো অনেক দেশ। অন্যদিকে ৭ সেপ্টেম্বর পাকিস্তানের জেলে বঙ্গবন্ধুর নামমাত্র গোপন বিচার করে তাঁকে দেশদ্রোহী ঘোষণা করে মৃত্যুদন্ড প্রদান করা হয়। কিন্তু দেশ ও বিশ্বের মুক্তিকামী জনগণ তাঁর নিরাপত্তা রক্ষার দাবী জানানো হলে তিনি রক্ষা পান। এদিকে জগজিৎ সিং অরোরার নেতৃত্বে ভারতীয় বাহিনী চলে আসে নভেম্বরে। গঠিত হয় ভারতীয় ও মুক্তিবাহিনী মিলে একটি যৌথ বাহিনী। ১৯৭১ সালের ডিসেম্বরে ভারতীয় সরকারের অংশগ্রহণের পর, পাকিস্তানী সেনাবাহিনী মুক্তিবাহিনী ও ভারতীয় সেনাবাহিনীর যৌথ দলের কাছে আত্মসমর্পণ করে এবং লীগ নেতৃবৃন্দ ঢাকায় ফিরে সরকার গঠন করেন। আত্মসমর্পনের দিনটি ছিল ১৬ ডিসেম্বর। তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে লেফটেন্যান্ট জেনারেল আমির আবদুল্লাহ খান নিয়াজির নেতৃত্বে প্রায় ৯৩ হাজার পাকিস্তানী সেনাবাহিনী অত্মসমর্পন করে সেদিন। বাংলার আকাশে বাতাসে বিজয়ের উল্লাস। অর্জিত হয় মহান বিজয় ও প্রতিষ্ঠা হয় ‘বাংলাদেশ’ নামক একটি স্বাধীন রাষ্ট্র। বিজয় অর্জনের মাধ্যমে ‘বাংলাদেশ’ নামক একটি স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা ছিল বাংলার প্রতিটি মানুষের জন্য এক বিরাট গৌরবময় অধ্যায়। কেননা, ১৭৫৭ সালের পলাশীর যুদ্ধে ইংরেজদের নিকট বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজ-উদ-দৌলার পতনের পর বাংলা দীর্ঘ বছর উপনিবেশিক শাসনে নির্মমভাবে শাসিত হয়ে আসছিল। তাছাড়া ১৯৪৭ সালের পাকিস্তান নামক একটি রাষ্ট্রের স্বাধীনতা ছিল বাংলাদেশের মানুষের জন্য আরেকটি উপনিবেশিক শাসনের নামান্তর। সে উপনিবেশিক শাসন থেকে মুক্তির আশায় বিভিন্ন সময় বাংলার মানুষ ১৯৭১ সালের পূর্ণ স্বাধীনতার পূর্ব পর্যন্ত আন্দোলন সংগ্রাম চালিয়ে যায়।
২০ ডিসেম্বর ১৯৭১ পাকিস্তানের রাষ্ট্রপতি এবং প্রধান সামরিক প্রশাসক হিসাবে ক্ষমতা গ্রহণ করে জুলফিকার আলী ভুট্টো। পরবর্তিতে ২৭ ডিসেম্বর বাংলাদেশ সরকার, ভারত, সোভিয়েত ইউনিয়নসহ বিভিন্ন দেশ ও মুক্তিকামী আপামর জনগণ বঙ্গবন্ধুর মুক্তির জন্য জোড় দাবী জানালে ১৯৭২ সালের ৮ জানুয়ারি নিশর্ত মুক্তি প্রদান করে পাকিস্তান সরকার। এরপর তিনি লন্ডন হয়েনতুন দিল্লিতে ফিরে আসেন এবং তিনি ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি বাংলাদেশে ফিরে আসেন। বিমানবন্দর থেকে সরাসরি রেসকোর্স ময়দানে এসে তিনি সেদিন লাখলাখ মানুষের সামনে বক্তৃতা দেন এবং দেশকে প্রধানমন্ত্রী শাসিত সরকার করে ১২ জানুয়ারি দেশের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করেন। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস। তিনি যখন যুদ্ধপরবর্তী বাংলাদেশকে বিভিন্ন সংকট থেকে উত্তরণের জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যান এবং যখন দেশের মানুষ সুখী ও সমৃদ্ধিও মুখ দেখতে থাকে ঠিক তখনই সেনাবাহিনীর কিছু নিয়ন্ত্রণহীন সদস্য বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যা করে। দিনটি ছিল ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট। বাংলায় নেমে আসে কালো ছায়া। আবারও অভিভাবকহীন হয়ে পড়ে বাংলাদেশ। বঙ্গবন্ধুর কন্যা, বাংলাদেশ সরকারের বর্তমান মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা ‘শেখ মুজিব আমার পিতা’ প্রবন্ধের শেষ লাইনে অত্যন্ত আবেগী হৃদয় নিয়ে লিখেছেন- “মায়ের স্নেহ, ভাইদের সান্নিধ্য পাবার জন্য উন্মুখ হয়ে থাকি, কিন্তু শত চিৎকার করলেও তো কাউকে আমি পাব না। কেউতো আর সাড়া দিতে পারবে না। তাদের জীবন নৃশংসভাবে বুলেট দিয়ে চিরদিনের মতো যে ঘাতকেরা স্তব্ধ করে দিল, তাদের কি বিচার হবে না? ”সঙ্গীতজ্ঞ হাসান মতিউর রহমানও রচনা করে ফেললেন একটি গান এবং গানটিতে সুর ও কন্ঠ দিলেন বিখ্যাত সুরকার মলয় কুমার গাঙ্গুলি। গানের প্রথম কলিটি ছিল- “যদি রাত পোহালে শোনা যেত, বঙ্গবন্ধু মরে নাই। যদি রাজপথে আবার মিছিল হতো, বঙ্গবন্ধুর মুক্তি চাই। তবে বিশ্ব পেত এক মহান নেতা, আমরা পেতাম ফিরে জাতির পিতা। ”কবি সুফিয়া কামাল তাঁর ‘ডাকিছে তোমারে’ কবিতার প্রথম অংশে লিখেছেন-
“এই বাংলার আকাশ-বাতাস, সাগর-গিরি ও নদী
ডাকিছে তোমারে বঙ্গবন্ধু, ফিরিয়া আসিতে যদি
হেরিতে এখনও মানব হৃদয়ে তোমার আসন পাতা
এখনও মানুষ স্মরিছে তোমারে, মাতা-পিতা-বোন-ভ্রাতা।”
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের জন্য কি না করেছেন। তিনি চলে গেছেন ঠিকই। উপহার দিয়েছেন একটি স্বাধীন দেশ। যে জীবন আরাম আয়েসে কেটে ফেলতে পারতেন সে জীবনের অধিকাংশ সময় বাংলার মানুষের জন্য তিনি কাটিয়েছেন জেলখানায়। এই মানুষটির অসীম ত্যাগ তিতিক্ষার বিনিময়েই আমরা পেয়েছি স্বাধীনতা। তাই তিনি হয়ে থাকবেন বাংলার প্রতিটি মানুষের হৃদয়ে চিরস্মরনীয়। তবে একটি অপ্রিয় সত্য কথা, সত্যিকারের স্বাধীনতার স্বাধ কি আমরা আজো পাচ্ছি? এ প্রশ্ন থেকেই যায়। কেননা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার পর এমন কিছু অশুভ শক্তি দেশের শাসন ক্ষমতায় এসেছিল যারা একটি স্বাধীন দেশের মৌলিক কিছু বিষয়কে ধ্বংস করে দিয়েছিল। তবে বর্তমানে বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এসেই দেশের উন্নয়নের যে পদক্ষেপগুলো হাতে নিয়েছেন তা দেশে বিদেশে অনেক প্রসংশা কুড়িয়েছে সত্যি। কিন্তু আমরা কি করছি? এখন দায়িত্ব হল আমাদের, যে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল সেই মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে বুকে ধারণ করে দেশ মাতৃকার উন্নয়নে নিজেকে সামিল করা এবং বঙ্গবন্ধুর প্রদর্শিত প্রতিটি পথ অনুসরণ করে একটি সুখী ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তোলা। এটিই হোক আমাদের আজকের অঙ্গীকার। বাংলাদেশ চিরজীবী হউক।
লেখক পরিচিতি: শিক্ষক, লেখক ও মুক্ত গবেষক
- স্বামী মারা যাওয়ার কয়েক ঘন্টার ব্যবধানে স্ত্রীর মৃত্যু
- ‘আগামী পাঁচ বছরে যুব উন্নয়নে ৫হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ করা হবে’
- কোরআন ও হাদিসের আলোকে ইসলামী দাওয়াত এর গুরুত্ব!
- সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের পাশে জেসিআই ঢাকা এস্পায়ার
- বানিাচংয়ে বজ্রপাতে ২ কৃষকের মৃত্যু
- ডোমারে পলিব্যাগে মোড়ানো নবজাতকের মরদেহ উদ্ধার
- সরকারী কর্মকর্তাদের নাম ভাঙ্গিয়ে প্রতারণা, অবশেষে পুলিশের কাছে গ্রেফতার
- খানসামায় ছোট ভাইয়ের হাতে বড় ভাই খুন
- রিটার্ন জমার বাধ্যবাধকতা থাকলেই ন্যূনতম কর ২ হাজার
- পিএসজি ছাড়ছেন মেসি
- শৈলকুপায় স্বামীকে শ্বাসরোধ করে হত্যার দায়ে স্ত্রী’র যাবজ্জীবন কারাদন্ড
- দাম কমবে যেসব পণ্যের
- দাম কমছে ইন্টারনেটের
- যেসব পণ্যের দাম বাড়বে
- সব সিগারেটের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব
- এলপি গ্যাসের নতুন দাম নির্ধারণ
- ফুলবাড়ী সরকারি কলেজে নবাগত শিক্ষার্থীদের বরন ও শ্রেণীপাঠ উদ্বোধন
- জয়পুরহাটে এলজিইডির মান নিয়ন্ত্রণ ল্যাবেরেটরি উদ্বোধন
- পাকিস্তানে ভয়াবহ বিস্ফোরণ, নিহত ৫
- শেরপুরে তরুণদের দক্ষতা উন্নয়ন শীর্ষক প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত
- ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেট হবে গরিববান্ধব: অর্থমন্ত্রী
- এবার হলিউডে পা রাখছেন সামান্থা
- পাসপোর্ট পেলেন সম্রাট, চিকিৎসার জন্য যেতে পারবেন বিদেশ
- সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য কী পদক্ষেপ, জানতে চাইলেন জাপানি রাষ্ট্রদূত
- ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনের ভোটগ্রহণ ১৭ জুলাই
- ৭ লাখ টাকা দেনমোহরে বিধবা দাদিকে বিয়ে করলেন নাতি
- গুণগত মানসম্পন্ন প্রকৌশল কাজই টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করবে- স্থানীয় সরকার মন্ত্রী
- বিদ্যুতের ঘাটতি ৩০০০ মেগাওয়াট, সারা দেশে লোডশেডিং
- নাইজেরিয়ার কাছে হেরে বিদায় স্বাগতিক আর্জেন্টিনার
- তিউনিসিয়াকে উড়িয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে ব্রাজিল
- মার্টিনেজকে আনতে তৎপরতা শুরু করেছে বিকাশ
- কানাডায় ভয়াবহ দাবানল, ঘর ছাড়া ১৬ হাজার মানুষ
- বিএনপি নেতা খায়রুল কবিরের বাড়িতে আগুন
- ঢাকায় থাপ্পড় পার্টির সন্ধান
- প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে এরদোয়ানের ফোন
- পে-স্কেল না হলেও সরকারি কর্মচারীদের বেতন বাড়বে
- রাজধানীতে বাড়ির উঠানে পুঁতে রাখা কানাডা প্রবাসী নারীর মরদেহ উদ্ধার
- সরকারি ব্যয়ে আকাশপথে প্রথম শ্রেণিতে ভ্রমণ স্থগিত
- মহালছড়িতে কমিউনিটি ক্লিনিকে স্বাস্থ্যসেবার মানোন্নয়নে সমন্বয় সভা
- চিলমারীতে বাড়ী-ভিটা রক্ষার দাবীতে মানববন্ধন
- সরকারি ব্যয়ে আকাশপথে প্রথম শ্রেণিতে ভ্রমণ স্থগিত
- ইবিতে গুচ্ছের ‘সি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা সম্পন্ন
- রোহিঙ্গাদের সম্মানজনক প্রত্যাবাসন চায় ওআইসি
- জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হলো দেশের প্রথম ভাসমান সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র
- ওরিয়েন্টেশনে অতিথির বক্তব্য চলাকালে মারামারি করল ইবির নবীন দু’গ্রুপ
- বিদ্যুতের ঘাটতি ৩০০০ মেগাওয়াট, সারা দেশে লোডশেডিং
- লক্ষ্য ও স্বপ্নপূরণে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান এরদোয়ানের
- আরব আমিরাতে ফার্নিচার কারখানায় আগুনে ৩ বাংলাদেশির মৃত্যু
- মির্জাপুরে মতবিনিময় করলেন আ.লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী সানি
- চীনের আদা ৫০০ থেকে ৫৫০ টাকা
- রামগড়ে বঙ্গবন্ধুর ‘জুলিও কুরি’ পদক প্রাপ্তির ৫০ বছর পূর্তিতে আনন্দ শোভাযাত্রা
- দ্বিতীয় মেয়াদে মালদ্বীপ-বাংলা সাংবাদিক ইউনিটির পরিচিতি ও সংবর্ধনা
- অশান্তি, সংঘাত চাই না: প্রধানমন্ত্রী
- নতুন ট্রেনের নাম ‘নীলফামারী এক্সপ্রেস’ করার দাবিতে মানববন্ধন
- আক্কেলপুরে কৃষকদের মধ্যে ভর্তুকি মূল্যে কৃষি যন্ত্রপাতি বিতরণ
- কালীগঞ্জে আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত
- ইবিতে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা ছাত্রকল্যাণ সমিতির নবীন বরণ অনুষ্ঠিত
- তিউনিসিয়াকে উড়িয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে ব্রাজিল
- শীতকালীন প্রকৃতি ও মানব জীবনের পরিবেশ দর্শন
- বাংলাদেশে ই-কমার্সের সমস্যা ও সম্ভাবনা
- বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বাংলাদেশের স্বাধীনতা
- প্রকৃতি ও পরিবেশ রক্ষায় জীববৈচিত্র্যের ভূমিকা
- বাঙালির জাতীয় জীবনে গৌরবময় ও ঐতিহ্যপূর্ণ দিন ২১ ফেব্রুয়ারি
- হারিয়ে যেতে বসেছে যৌথ পরিবারের সুবিধা ও বন্ধন
- জন্মদিনের শ্রদ্ধাঞ্জলি: শেখ হাসিনা দীর্ঘজীবী হোন
- পথশিশুর ঠিকানা কি পথেই থেকে যাবে?
- ‘বিজয় দিবস’ আনন্দ ও আত্ম জিজ্ঞাসার প্রশ্নে
- জাতির জনকের জন্ম শত বার্ষিকী, কিছু কথা কিছু প্রত্যাশা
- সমাজের এক নিবেদিত প্রাণ শাপলা ত্রিপুরা
- বহুমুখী প্রতিভাময়ী কুসুম কুমারী দাশ
- উহান থেকে ঢাকা : প্রসঙ্গ কোভিড-১৯
- ঢাকাই জামদানির জানা-অজানা
- ত্রিপুরা জনগোষ্ঠী ও সমকালীন ভাবনা