Berger Paint

ঢাকা, সোমবার   ২০ মার্চ ২০২৩,   চৈত্র ৬ ১৪২৯

ব্রেকিং:
চট্টগ্রাম, গাজীপুর, কক্সবাজার, নারায়ানগঞ্জ, পাবনা, টাঙ্গাইল ও ময়মনসিংহ ব্যুরো / জেলা প্রতিনিধি`র জন্য আগ্রহী প্রার্থীদের আবেদন পাঠানোর আহ্বান করা হচ্ছে। শিক্ষাগত যোগ্যতা- স্নাতক, অভিজ্ঞদের ক্ষেত্রে শিক্ষাগত যোগ্যতা শিথিল যোগ্য। দৈনিক প্রতিদিনের চিত্র পত্রিকার `প্রিন্ট এবং অনলাইন পোর্টাল`-এ প্রতিনিধি নিয়োগ পেতে অথবা `যেকোন বিষয়ে` আর্থিক লেনদেন না করার জন্য আগ্রহী প্রার্থীদের এবং প্রতিনিধিদের অনুরোধ করা হল।
সর্বশেষ:
মাদারীপুরে ১৯ যাত্রী নিহতের ঘটনায় বাস মালিকের বিরুদ্ধে মামলা পশ্চিমবঙ্গে অ্যাডিনোভাইরাসের থাবা, ১৯ শিশুর মৃত্যু আর্জেন্টিনাকে ১৩ গোল দিয়ে কোপার শিরোপা জিতল ব্রাজিল দেশের প্রথম সাবমেরিন ঘাঁটির কার্যক্রম শুরু হচ্ছে আজ শেরপুরে ব্রীজের অভাবে দূর্ভোগে ১০ গ্রামের অর্ধলাখ মানুষ বীরত্বপূর্ণ কাজের জন্য পদক পাচ্ছে র‍্যাবের কুকুর ‘চিতা’ আজিমপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় যুবক নিহত

নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদ (হুজি’র) ০৬ সদস্য গ্রেফতার

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২৮ জানুয়ারি ২০২৩  

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের সিটিটিসি ইউনিটের সিটি-সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন ডিভিশন এর ডিজিটাল ফরেনসিক টিম বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদ (হুজি’র) ০৬ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের সিটিটিসি ইউনিটের সিটি-সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন ডিভিশন এর ডিজিটাল ফরেনসিক টিম বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদ (হুজি’র) ০৬ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে।

 

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের সিটিটিসি ইউনিটের সিটি-সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন ডিভিশন এর ডিজিটাল ফরেনসিক টিম বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদ (হুজি’র) ০৬ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে। গত ২৭/০১/২০২৩ খ্রিঃ তারিখে রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন এলাকা হতে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়।

 

গ্রেফতারকৃতদের নাম- ১। মোঃ ফখরুল ইসলাম (৫৮), ২। মোঃ সাইফুল ইসলাম (২৪), ৩। মোঃ সুরুজ্জামান (৪৫), ৪। হাফেজ মোঃ আব্দুল্লাহ আল মামুন (২৩), ৫। মোঃ দীন ইসলাম (২৫) এবং ৬। মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন (৪৬) । গ্রেফতারের সময় তাদের হেফাজত হতে জঙ্গি কর্মকান্ডে ব্যবহৃত ০৯টি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে।

 

উল্লেখ্য, বিদেশ হতে জঙ্গি বিষয়ে ট্রেনিং প্রাপ্ত বাংলাদেশে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গী সংগঠন হরকাতুল জিহাদ (হুজি’র) সক্রিয় সদস্য মোঃ ফখরুল ইসলাম ১৯৮৮ সালে গাজীপুর জেলার টঙ্গী থানাধীন তামিরুল মিল্লাত মাদ্রাসায় তিনি দারোয়ানের চাকুরী করতেন। পরবর্তীতে ১৯৮৮ সালে কাজের উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ হতে পাকিস্তানের করাচী শহরে গমন করেন। তিনি পাকিস্থানে অবস্থানকালে বাংলাদেশী বংশোদ্ভুত মুফতি জাকির হোসেনের সাথে পরিচয় হয়। মুফতি জাকির হোসেন যিনি পাকিস্তানের করাচি শহরে ইসলামীয়া মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল এবং আল কায়েদার সামরিক কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করতেন। মুফতি জাকির আল কায়েদা সংগঠনের জিহাদী ট্রেনিং এর কমান্ডার। মুফতি জাকির মোঃ ফখরুল ইসলাম’কে জিহাদের দাওয়াত দিলে সে দাওয়াত গ্রহন করেন। ফখরুল ইসলাম জিহাদী ট্রেনিং-এ অংশগ্রহনের জন্য মুফতি জাকিরের সাথে একাধিকবার পাকিস্তান হতে আফগানিস্তানের কান্দাহার শহরে দীর্ঘকালীন প্রশিক্ষণে যায়। ফখরুল উক্ত ট্রেনিং-এ বিভিন্ন অস্ত্র প্রশিক্ষনের পাশাপাশি অত্যাধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র- অক ৪৭, এলএমজি ও রকেট লাঞ্চার পরিচালনা শিখেন। ট্রেনিং এর সময় কান্দাহারের সমশেদ পাহাড়ে তিনি নিয়মিত ফায়ারিং অনুশীলন করতেন। অনুশীলনের সময় ফখরুল ইসলাম অক ৪৭ সহ সশস্ত্র অবস্থায় প্রশিক্ষন এলাকায় ০৪ ঘন্টা করে নিরাপত্তামূলক পাহারা ডিউটি করতেন। উক্ত সময়ে তিনি আলকায়েদা নেতা ওসামা বিন লাদেন ও মোল্লা ওমরের সাথে একাধিকবার সাক্ষাত করেন। তিনি আফগানিস্তানে বিভিন্ন মেয়াদে জিহাদী ট্রেনিং করার পর পুনরায় পাকিস্তানের করাচিতে ফিরে আসেন। করাচী থেকে ১৯৯৫ সালে ইরানের রাজধানী তেহরান যান এবং প্রায় ০৩ বছর সেখানে থাকার পর করাচীতে ফিরে এসে তিনি পরবর্তীতে ইসলামাবাদ থেকে ভারতের ভিসা নিয়ে ১৯৯৮ সনে বাংলাদেশে চলে আসেন।

 

আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তথা সিটিটিসি’র জঙ্গি কার্যক্রম বিরোধী অপারেশন চলমান থাকায় এবং নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গী সংগঠন হরকাতুল জিহাদ এর মুফতি হান্নান সহ একাধিক নেতৃস্থানীয় ব্যক্তি গ্রেফতার হওয়ায় হরকাতুল জিহাদ সংগঠনটি নেতৃত্ব শূণ্য হয়ে যায়। এরই ধারাবাহিকতায় দেশে এসে ফখরুল ইসলাম জঙ্গি কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে  নতুন সদস্য সংগ্রহ ও বাংলাদেশে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গী সংগঠন হরকাতুল জিহাদ (হুজি’র) সদস্য সংগ্রহ, অর্থ সংগ্রহ করা এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দাওয়াতী কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছেন। তিনি সাংঠনিক কার্যক্রম স্বশরীরে ছাড়াও বিভিন্ন সামাজিক যোগাযাগ মাধ্যম ব্যবহার করে অব্যাহত রাখেন। তিনি অত্যাধুনিক সামাজিক যোগাযাগ মাধ্যম এনক্রিপটেড এ্যাপস ‘‘ইরচ’’ ব্যবহারের মাধ্যমে অত্যন্ত সতর্কতার সাথে বিদেশে অবস্থানরত প্রবাসীদের এবং বাংলাদেশের অন্যান্য হুজি সদস্যদের সাথে উগ্রবাদী ও আক্রমনাত্মক বিষয়ে আলোচনা করে ম্যাসেজ আদান প্রদান করেন এবং যেকোন সময় বাংলাদেশের গুরুপূর্ণ স্থাপনাগুলোতে বড় ধরনের জঙ্গী হামলা পরিচালনার বিষয়ে নিজেদের মধ্যে পরিকল্পনা করেন। বাংলাদেশের হুজি সদস্যদের বান্দরবন পাহাড়ী এলাকায় প্রশিক্ষণ প্রদানের ব্যবস্থা করার পরিকল্পনা করে। তিনি ও তার ছেলে আটককৃত আসামী মোঃ সাইফুল ইসলাম (২৪) অন্যান্য হুজি সদস্যদের নিয়ে একাধিকবার কক্সবাজার জেলায় অবস্থিত রোহিঙ্গা ক্যাম্পে রোহিঙ্গাদের তাদের সংগঠনে রিক্রুটের উদ্দেশ্যে এবং জিহাদী কার্যক্রমের অংশ হিসাবে রোহিঙ্গাদের অনুপ্রানিত করার উদ্দেশ্যে তাদেরকে বিভিন্ন মোটা অংকের টাকা অনুদান প্রদান করেন।

 

গ্রেফতারকৃত অপর আসামী হাফেজ মোঃ আব্দুল্লাহ আল মামুন (২৩) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সিকিউরড এনক্রিপটেড এ্যাপস ঞবষবমৎধস ব্যবহার করে ঞবষবমৎধস গ্রæপ “মোরা সত্যের সৈনিক” এর ধফসরহ “অস্থায়ী মুসাফির” হিসাবে ছদ্মনাম ধারণ করে গ্রæপটি পরিচালনা করে। মোঃ আব্দুল্লাহ আল মামুন ইরঢ় অঢ়ঢ়ং এ নিজেকে গধসঁহঁষ হিসেবে ছদ্মনাম ধারণ করেন। হাফেজ মোঃ আব্দুল্লাহ আল মামুন ঞবষবমৎধস অঢ়ঢ়ং এর মাধ্যমে বিদেশে অবস্থানরত প্রবাসীদের এবং বাংলাদেশের অন্যান্য হুজি সদস্যদের সাথে উগ্রবাদী ও আক্রমনাত্মক বিষয়ে আলোচনা করে ম্যাসেজ আদান প্রদান করেন। নিষিদ্ধ ঘোষিত হুজির একটি এনক্রিপটেড এ্যাপ এর প্রাইভেট চ্যানেল “একটু প্রস্তুতির” কনটেন্ট হিসেবে “একটি বোমা তৈরী করো তোমার মায়ের রান্নার ঘরে” শীর্ষক ১০ পাতার ডকুমেন্ট এবং একই চ্যানেল থেকে টাইম বোমা বানানো বাংলা বিবরনীসহ ভিডিও শেয়ার করে। আব্দুল্লাহ আল মামুন উক্ত এনক্রিপটেড এ্যাপস্ এর চ্যানেল থেকে প্রাপ্ত কনটেন্ট তার সংগঠনের পরিচিত দুই একজনকে হাতে কলমে বোমা বানানোর প্রশিক্ষন লাভের উদ্দেশ্যে এবং বোমা বানানোর নির্দেশনা দিয়ে শেয়ার করেছে।
 

 

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে, গ্রেফতারকৃতরা জানায় যে, তারা ঞবষবমৎধস গ্রæপের মাধ্যমে সক্রিয় থেকে উগ্রবাদী কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে।  গ্রেফতারকৃত ও তাদের অন্যান্য সহযোগীরা পরস্পরের যোগসাজসে উগ্রবাদী ও আক্রমনাত্মক ভিডিও ও তথ্য শেয়ার এবং নিজেদের মধ্যে গোপন তথ্য আদান প্রদান করে থাকে। তারা উক্ত গ্রæপে উগ্রবাদী ও আক্রমনাত্মক প্রশিক্ষনের বিষয়ে আলোচনার পাশাপাশি সচিত্র প্রশিক্ষণ ডকুমেন্টস(পিডিএফ,ভিডিও, অডিও) আদান প্রদান করতো। পলাতক অন্যান্য আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত আছে।

 

গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস বিরোধী আইনে ০১ টি মামলা রুজু করা হয়েছে।

 

সিটিটিসি ইউনিটের সিটি-সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন ডিভিশন এর ডিজিটাল ফরেনসিক টিম কর্তৃক অভিযানটি পরিচালিত হয়।

এই বিভাগের আরো খবর