Berger Paint

ঢাকা, মঙ্গলবার   ৩০ মে ২০২৩,   জ্যৈষ্ঠ ১৬ ১৪৩০

ব্রেকিং:
চট্টগ্রাম, গাজীপুর, কক্সবাজার, নারায়ানগঞ্জ, পাবনা, টাঙ্গাইল ও ময়মনসিংহ ব্যুরো / জেলা প্রতিনিধি`র জন্য আগ্রহী প্রার্থীদের আবেদন পাঠানোর আহ্বান করা হচ্ছে। শিক্ষাগত যোগ্যতা- স্নাতক, অভিজ্ঞদের ক্ষেত্রে শিক্ষাগত যোগ্যতা শিথিল যোগ্য। দৈনিক প্রতিদিনের চিত্র পত্রিকার `প্রিন্ট এবং অনলাইন পোর্টাল`-এ প্রতিনিধি নিয়োগ পেতে অথবা `যেকোন বিষয়ে` আর্থিক লেনদেন না করার জন্য আগ্রহী প্রার্থীদের এবং প্রতিনিধিদের অনুরোধ করা হল।
সর্বশেষ:
মেক্সিকোয় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত ১০ ফের বায়ুদূষণের শীর্ষে ঢাকা গাজীপুরে ব্যবহৃত ইভিএম ব‌রিশালে দেশ ভয়ংকর ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে : রিজভী নিজের ছেলেকে চাকরিচ্যুত করার ঘোষণা জাপানের প্রধানমন্ত্রীর! নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বসতঘরে পিকআপ, প্রাণ গেল ঘুমন্ত মা-মেয়ের বিএনপি নেতা টুকুর ৯, আমানের ১৩ বছরের সাজা বহাল

‘অনন্যা’ নিজের মতো নিজেই অনন্যা

আবুল খায়ের, বিশেষ প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ৭ মার্চ ২০২৩  

 

 

প্রতিকুল এবং প্রতিবন্ধকতাকে উপেক্ষা করে নারীরা যে কিছু করতে পারে, তা তাদের মনের জোরে সে সব সম্ভবনাকে বিকশিত করে। ইচ্ছা থাকলেই উপায় নিশ্চিত সেটি নিজেই বের করে নিয়েছেন ‘ফারহানা আজিজা অনন্যা’।

 

যুগের সাথে ফ্যাশনধারা বদলালেও সবাই কিন্তু নিজেকে বদলান না। আসলে অন্য কারও মতো হওয়ার বা অনুসরণ করার প্রয়োজনই পড়েনি আপনার। আপনার আত্মবিশ্বাস এবং সঠিক পরিশ্রম আপনাকে আজ ব্যক্তি অনন্যা করে তুলেছে। আপনার জীবনধারা অন্য কারও সঙ্গে মিলাতে হয়নি। কারণ আপনার অতি সাধারণ ব্যক্তিত্ব আপনাকে অন্যান্যদের থেকে সম্পূর্ণ আলাদা করেছে।

 

নারী তাঁর জীবনের কর্মক্ষেত্রে সে কতখানি সফল সেটা নিরুপনের মাপকাঠি সময়ই বলে দেয়। যে নারীর পরিবারে উপার্জন সক্ষম অনেক আপনজন থেকেও- যাকে নিজের কাঁধে তুলে নিতে হয়েছে পরিবারের সমস্ত দায়িত্ব, সে বিরত্বের কথা বলে শেষ হবার? অনন্যার এই সাহসী পদক্ষেপ নারী সমাজে আজীবন জীবন্ত উদাহরণ হিসেবে রচয়িত হয়ে থাকবে।

 

কর্মক্ষেত্রে প্রত্যেককে তার দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে ভিন্ন ভিন্ন পরিবেশে কাজ করতে হয়। আর সে পরিবেশ-পরিস্থিতি কখনো অনুকূলে কখনো প্রতিকূলে অবস্থান করে। এতে আশেপাশের কেবিন কি ডেস্কে চা-কফির চুমুকে কানা-ঘুশার বাতাস উড়তে থাকে। অনন্যাও প্রতিনিয়তই এমন পরিস্থিত স্বীকার হতে হয়েছে এবং তিনি সে সমস্ত প্রতিবন্ধকতা জয় করে কর্মক্ষেত্রে অবিচল রয়েছে। অনন্যা থেমে থাকার মানুষ নয়, সে দূর্বার গতিতে তাঁর লক্ষ্যে পৌঁছবে।

 

কিন্তু আমরা যারা আপনজন নামে সমাজ-সংসারে সমাদৃত রয়েছি অনন্যাদের মত নারীদের বেদনার তীব্রতা  অনুভব না করে প্রতিনিয়তেই তাদের আঘাত করে চলেছি। যা আদৌ কারোর কাম্য নয়।

 

 

আমি যাকে নিয়ে লিখছি তিনি হলেন- ফারহানা আজিজা অনন্যা। একজন ব্যাংকার, তিনি ট্রাস্ট ব্যাংক-এ কর্মরত আছেন। পাশাপাশি সমসাময়িক ঘটনা নিয়ে লিখছেন ছোট গল্পের বই। ইতিমধ্যে অনুভবে অভিমান এবং পুরোনো এ্যলবাম নামে দুটি বই প্রকাশিত হয়েছে তাঁর। তিনি একাধারে লেখিকা, ব্যাংকার এবং সর্বোপরি তিনি দুই সন্তানের গর্বিত মা। মেয়ের নাম রিদিতা দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ন করছে অপর জন ছেলে সাফওয়ান এ লেভেলে পড়ছে। সংগ্রামী এই নারী ২ সন্তান ও স্বামীকে নিয়ে নিজের মতো করে বেশ ভালো সময় পার করছেন। পাশাপাশি সামাজিকতা রক্ষা করে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন।

 

ব্যক্তি ‘ফারহানা আজিজা অনন্যা’ নিজের নামেই পরিচিত। কে বলেছে নারীরা পারে না। অনন্যার সফলতা প্রমাণ করেছে নারীদের সুযোগ দিলে সব কাজেই তাদের দ্বারা সম্ভব। চারিদিকে তাকালে দেখা যায় মেয়েদের জয় জয়কার। দেশের প্রধানমন্ত্রী নারী, স্পিকার নারী, এমনকি বিরোধীদলের নেত্রীও নারী। এই পরিসংখ্যান প্রমাণ করে মেয়েরা এখন অনেক এগিয়ে। জয় হোক ফারহানার মত আরো অসংখ্য নারীদের।

 

আমাদের দেশে নিরাপদ কর্মপরিবেশ ও ভালো বেতনকাঠামোর কারণে ব্যাংক-এর চাকরি বেশ সমাদৃত। ফলে অতীতের যেকোনো সময়ের তুলনায় এখন ব্যাংকে নারীদের অংশগ্রহণ বেশ লক্ষণীয়। এই চাকরি করলে সামাজিক স্বীকৃতিও মেলে বেশ ভালো। সে জন্য নারীরা ব্যাংক-এ ক্যারিয়ার গড়তে আগ্রহ দেখাচ্ছেন। নারীরা শুধু যে ব্যাংকে চাকরিই করছেন, তা নয়; বিভিন্ন দায়িত্বশীল পদে বসে নেতৃত্বও দিচ্ছেন। আবার ব্যাংকের নীতিনির্ধারণেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন অনেক নারী।

 

এছাড়া ব্যাংকের উচ্চ পদে নারী নেতৃত্ব বাড়ছে। ব্যাংকে নারীর প্রতিনিধিত্ব বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তা হিসেবেও নারীদের দেখা যাচ্ছে। যেমন- বর্তমানে বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংক ট্রাস্ট ব্যাংক লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন হুমায়রা আজম।

 

 

নারীদের এই উত্তরণে একটি উদ্বেগ পরিলক্ষিত হয়। এখনো স্বামী ও সমাজের কিছু মানুষ মনে করেন, ঘরের সব কাজ নারীদের৷ অনেক স্বামীরা ঘরের কিছু একটা করে দিয়ে বলতে শোনা যায়, ‘তোমার কাজটা করে দিলাম৷' অথচ এটি তাঁর সংসারের নিজের কাজ, সেটি স্বামীরা হরহামেশায় ভুলে যান৷ আর এতে করে অনন্যাদের মত পথপ্রদর্শী নারীদের সৃষ্টিশীল চিন্ত-চেতনায় ব্যাঘাত তৈরী করে দেশ ও প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নের বাঁধাগ্রস্থ করে। অতএব, যারা এই ধরণের চেতনা লালন ও ধারণ করেন তাদেরকে এই গন্ডি থেকে বের হয়ে আসতে হবে।

 

ফারহানা আজিজা অনন্যা সাথে এক আপলাপচারিতায় তিনি বলেছিলেন, রাষ্ট্রের উন্নয়নে নারীদের ভুমিকা দেখতে চাইলে সমাজে নারীদের মর্যাদা বৃদ্ধিতে আরো উদ্যোগ নিতে হবে। ‘মর্যাদায় গড়ি সমতা' এই বাক্যটিকে প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এই ধরণের চিন্তাধারায় নারীদের প্রতি সহিংসতাও কমবে৷ আপনি যাকে সম্মান করেন, নিশ্চয়ই তাকে নির্যাতন করবেন না৷ অর্থাৎ আমাদের নারীর সম্মান সমাজে, রাষ্ট্রে বাড়াতে হবে৷ সমাজে নারীদের যে বহুমুখী অবদান তাকে সে স্বীকৃতি দিতে হবে, সম্মান করতে হবে, মূল্যায়ন করতে হবে৷’ অনন্যা বলেন, একটা কথা না বলে পারছি না- আমার পড়া-লেখা এবং চাকরির করার পেছনে শুরু থেকে শেষ প্রর্যন্ত তাঁর মায়ের অসামান্য প্রচেষ্টার কথা। মায়ের (সৈয়দা রোকেয়া সুলতানা ডেইজী)’র অনুপ্রেরণায় সফলতার সিঁড়ি বেঁয়ে আজকে এই অবস্থানে আসতে পেরেছেন। ধন্যবাদ দিতে সে মাকে যার অদম্য সাহজ ও মনোবলের কারণে ‘অনন্যা’ আজ এই অবস্থানে।  

 

অবশেষে বলতে চাই ‘শুধু নারী দিবস’ বলেই একটি নিদিষ্ট দিনে আমরা নারীদের নিয়ে ভাববো, তাদের সন্মান দেখাবো তা কিন্তু নয়। আমরা প্রত্যেকেই প্রতিটি নারীকে তাদের যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করবো এবং তাদের ইচ্ছাপূরণের অধিকার প্রদান করব।

 

এই বিভাগের আরো খবর