Berger Paint

ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২৩ মার্চ ২০২৩,   চৈত্র ৮ ১৪২৯

ব্রেকিং:
চট্টগ্রাম, গাজীপুর, কক্সবাজার, নারায়ানগঞ্জ, পাবনা, টাঙ্গাইল ও ময়মনসিংহ ব্যুরো / জেলা প্রতিনিধি`র জন্য আগ্রহী প্রার্থীদের আবেদন পাঠানোর আহ্বান করা হচ্ছে। শিক্ষাগত যোগ্যতা- স্নাতক, অভিজ্ঞদের ক্ষেত্রে শিক্ষাগত যোগ্যতা শিথিল যোগ্য। দৈনিক প্রতিদিনের চিত্র পত্রিকার `প্রিন্ট এবং অনলাইন পোর্টাল`-এ প্রতিনিধি নিয়োগ পেতে অথবা `যেকোন বিষয়ে` আর্থিক লেনদেন না করার জন্য আগ্রহী প্রার্থীদের এবং প্রতিনিধিদের অনুরোধ করা হল।
সর্বশেষ:
শি-পুতিনের আনুষ্ঠানিক বৈঠক আজ মুগদায় গ্যাস নেওয়ার সময় ট্রাকের সিলিন্ডার বিস্ফোরণে যুবকের মৃত্যু ঢাকাসহ ১৯ জেলায় ৬০ কিমি বেগে ঝড়বৃষ্টির পূর্বাভাস ট্রাম্পকে গ্রেফতার করা হতে পারে আজ আরাভকে খুঁজছে দুবাই পুলিশ

চুলেও থাক রঙের ছোঁয়া, বেছে নিন আপনার উপযোগী হেয়ার কালার

প্রতিদিনের চিত্র ডেস্ক

প্রকাশিত: ১১ নভেম্বর ২০১৯  

ছবি -আবির মডেল -আতিশা সাবরিন

ছবি -আবির মডেল -আতিশা সাবরিন

চুলে লাগুক রঙের ঝিলিক

সত্যিটা স্বীকার করে নেওয়াই ভালো! যতই কুঁচবরণ কন্যার মেঘবরণ চুলের প্রশংসা ছোটবেলা থেকে শুনুন না কেন, পিঠ ছাপানো একঢাল কালো চুলের আবেদন যতটা, কাঁধ ছোঁয়া বাদামি আভা ছিটকোনো ঝলমলে লেয়ার্ড চুলের আবেদনও তার চেয়ে কোনও অংশে কম নয়। অথবা নতুন বার্গান্ডি শেডটা দিয়ে স্ট্রিকস করার পর যখন বন্ধুদের ঈর্ষা মাখা মুখগুলো দেখতে পাওয়া যায়, সেটাও কি ফেলে দেওয়ার? তা ছাড়া একঘেয়ে কালো চুল আর কাঁহাতক সহ্য করা যায়! জীবনের রং চুলেও উপচে পড়বে, তবেই না?

একটা সময় ছিল যখন চুল রং করার কথা মেয়েরা ভাবতেন চুলে পাক ধরতে শুরু করার পর। সে জমানা থেকে মেয়েরা এখন বহুদূর এগিয়ে গেছেন। চুলের রং এখন আর নেহাতই প্রয়োজন নয়, বরং রীতিমতো ফ্যাশন স্টেটমেন্ট। তাই চুলের জন্মগত স্বাভাবিক কালো রং পালটে বাদামি, বার্গান্ডি বা অবার্ন শেড বেছে নিচ্ছেন অনেক মেয়ে। কিন্তু সব রং সবাইকে মানায় না, এটাও সমান সত্যি। কাজেই সালোঁয় ঢোকার পর যখন শেডকার্ডটা হাতে নেবেন, তখন যাতে ঠিক রংটা বেছে নিতে পারেন তার জন্য নিজের চুল আর ত্বক সম্পর্কে কিছু ধারণা থাকা দরকার।

চুলের রং এখন ফ্যাশন স্টেটমেন্টমেলানিন নামে একটি রঞ্জক উপাদান আমাদের ত্বক, চুল আর চোখের মণির রঙের জন্য দায়ী। শুধু তাই নয়, জলবায়ুর তারতম্যে আমাদের ত্বকের রং কীভাবে ও কতটা পালটাবে, তাও নির্ধারণ করে দেয় মেলানিন। শরীরে মেলানিনের পরিমাণে তারতম্য হওয়ার দরুণ কেউ ফর্সা হন, কেউ হন গমরঙা আবার কেউ শ্যামাঙ্গী। চুলের রং বেছে নেওয়ার সময় ত্বকের রং সম্পর্কেও স্পষ্টভাবে ওয়াকিবহাল হতে হবে। ত্বকের রং আর চুলের রং যদি সম্পূর্ণ বেমানান হয়, তা হলে কিন্তু পুরো লুকটা অস্বাভাবিক আর কৃত্রিম দেখাবে। তাই এমন রংই বাছুন যা আপনার ত্বকের রঙের সঙ্গে মানানসই।
আপনার গায়ের রং কেমন বুঝবেন কীভাবে?
চুলের রং ঠিকঠাক বেছে নেওয়ার জন্য আগে দেখে নিন আপনার গায়ের রঙের সঠিক টোনটা কী। বাঙালি তথা ভারতীয় গায়ের রংকে মোটামুটি দুটো বড়ো ভাগে ভাগ করা যায়, উষ্ণ ও শীতল। রোদে বেরোলে যদি আপনার ত্বক লালচে হয়ে যায়, তা হলে আপনার স্কিন টোন শীতল এবং যদি রোদে আপনার ত্বক পুড়ে যায়, তা হলে আপনার স্কিন টোন উষ্ণ। নিজের স্কিন টোন বুঝে নিয়ে বেছে নিন সঠিক হেয়ার কালার।

 


স্কিন টোনের উপর ভিত্তি করে কীভাবে বাছবেন আপনার চুলের রং?
চুলের রং বেছে নিতে গিয়ে অনেকেই চলতি ট্রেন্ডের স্রোতে গা ভাসান আর সবচেয়ে বড়ো ভুলটা সেখানেই হয়৷ তাই ট্রেন্ডের কথা অবশ্যই মাথায় রাখবেন, কিন্তু নতুন কোনও রং বাছার আগে দেখে নিন তা আদৌ আপনার ত্বক, চেহারা ও ব্যক্তিত্বের সঙ্গে মানানসই কিনা৷

বাঙালি মেয়েদের ত্বক সাধারণত উষ্ণ টোনেরই হয়। গাঢ় বাদামি, লাল বা বার্গান্ডির মতো শেড বাঙালি মেয়েদের ত্বকের সঙ্গে দারুণ মানিয়ে যায়।

এমন রং বাছুন যা আপনার চুলের আসল রঙের চেয়ে হয় এক বা দু’ শেড হালকা অথবা গাঢ়।

আপনার চোখের মণি যে রঙের, সেই রঙের হেয়ার কালার বেছে নিলেও মানানসই হবে।

যাঁদের ত্বকে উষ্ণ আন্ডারটোন রয়েছে তাঁরা কপারের মতো উষ্ণ রং বেছে নিতে পারেন। শীতল আন্ডারটোনের মালকিনরা ওয়ালনাট ব্রাউনের মতো শীতল রং বাছুন।

চিরকালের সেরা কিছু ন্যাচারাল হেয়ার কালার

বাদামি
বাদামি হেয়ার কালারটি নানা শেডে পাওয়া যায়৷ তাই ফর্সা থেকে শুরু করে শ্যামবর্ণ ত্বকেও দারুণ মানানসই এই শেডটি৷ উষ্ণ স্কিন টোন যাঁদের তাঁরা চকোলেট ব্রাউন বা অ্যাশ ব্রাউন বা অন্য কোনও গাঢ় বাদামি শেড স্বচ্ছন্দে লাগাতে পারেন৷ শীতল স্কিন টোনের মেয়েরা মেহগনি বা চেস্টনাট ব্রাউন রং করলে ভালো দেখাবে৷

বার্গান্ডি
বাদামির টেনে দেওয়া চৌকাঠের বাইরে পা রাখার ইচ্ছে হচ্ছে অথচ চোখধাঁধানো কিছু করতেও সাহস হচ্ছে না? আপনার জন্য আদর্শ হতে পারে বার্গান্ডি৷ বাদামির মতো এই রংটিও প্রায় সব ধরনের ভারতীয় ত্বকের সঙ্গে মানিয়ে যায়৷ গমরঙা, উজ্জ্বল শ্যাম বা শ্যামবর্ণ, যে ধরনের গায়ের রংই আপনার হোক না কেন, বার্গান্ডি ভি়ড়ের মধ্যেও আপনাকে আলাদা করে দেবে৷
লাল
এই রংটা নিয়ে কোনও একপেশে মতামত দেওয়া মুশকিল৷ এমনিতে ভারতীয় বা বাঙালি ত্বকের সঙ্গে লাল ঠিক যায় না, কিন্তু বুদ্ধি করে ব্যবহার করলে আবার দারুণ দেখায়৷ ফর্সা মেয়েরা হালকা লাল বা কপার শেডের হেয়ার কালার লাগাতে পারেন, অন্যদিকে শ্যামবর্ণাদের ভালো দেখাবে ব্লু বেসের গাঢ় লাল শেডে৷ তবে গমরঙা ত্বকের মালকিনরা লাল এড়িয়ে চলতে পারলেই ভালো৷

সোনালি
এমনিতে ভারতীয় ত্বকের সঙ্গে সোনালি চুল মানানসই নয়৷ তবু উজ্জ্বল ফর্সারা সোনালি রং লাগাতে পারেন৷ কিন্তু শ্যামবর্ণারা সোনালির ধারপাশ দিয়েও যাবেন না৷ হুইটিশ বা গমরঙা ত্বকের মেয়েরা পুরো চুলটা সোনালি না করে অন্য রঙের সঙ্গে সোনালি হাইলাইট করে নিলে দারুণ আকর্ষণীয় দেখাবে৷

চুলে খুব নাটকীয় কিছু বদল না এনেও পাঁচজনের মধ্যে আলাদা হতে চাইলে চুলে হাইলাইট করে নিতে পারেন৷ লাল, পার্পল, মিলেনিয়াল পিঙ্ক থেকে শুরু করে ইচ্ছেমতো রঙে রাঙিয়ে নিন চুলের গোছা অথবা স্ট্রিক করে নিন৷ অসম্ভব ট্রেন্ডি আর স্টাইলিশ দেখাবে৷ আপনার ভিতরের কেয়ারফ্রি, মজাদার সত্তাটা বের করে আনে হাইলাইট৷ করার পরে যদি মনে হয় মানাচ্ছে না, অসুবিধে নেই৷ গোটা চুলটা আবার রং করে নিলেই হল!

পার্মানেন্ট হেয়ার কালার
এর অন্য নাম হেয়ার ডাই৷ দীর্ঘ সময় ধরে চুলের রং ধরে রাখতে পার্মানেন্ট হেয়ার কালার লাগানো হয়৷ পাকা চুল ঢাকতেও পার্মানেন্ট হেয়ার কালার দারুণ উপযোগী৷ পার্মানেন্ট হেয়ার কালারের আর একটি বিশেষত্ব হল, এটি চুলের আসল রংকে দু’ শেড পর্যন্ত হালকা বা গাঢ় করে দিতে পারে এবং চুল স্বাভাবিকই দেখায়। নিয়মিত টাচ আপেই চুল থাকে উজ্জ্বল, ঝলমলে৷
পার্মানেন্ট হেয়ার কালারের সুবিধে
পার্মানেন্ট হেয়ার কালারের সবচেয়ে বড়ো সুবিধে হল, কম খরচেই স্বচ্ছন্দে করিয়ে নেওয়া যায়৷ কালার করার পর চুল মেনটেন করাও সহজ৷ আজকাল নানা নামীদামি ব্র্যান্ড অজস্র পার্মানেন্ট হেয়ার কালার বাজারে এনেছে৷ ন্যাচারাল শেড থেকে শুরু করে উজ্জ্বল ট্রেন্ডি রং, সবই মিলবে পাবেন সেই সম্ভারে৷ এমনকী, ইচ্ছে করলে আর সম্ভব হলে বাড়িতেও করিয়ে নিতে পারেন৷ ব্যস্ততার কারণে যাঁরা নিয়মিত চুলের রং করানোর সময় পান না, তাঁদের জন্য পার্মানেন্ট হেয়ার কালার আদর্শ৷

পার্মানেন্ট হেয়ার কালারের অসুবিধে
বারবার পার্মানেন্ট হেয়ার কালার করালে বা টাচ আপ করালে চুল শুষ্ক ও ভঙ্গুর হয়ে যায়। আর একটা সমস্যা হল, পার্মানেন্ট হেয়ার কালারের রং ধীরে ধীরে ফিকে হয়ে এলেও পুরোপুরি ওঠে না কখনও। চুল যত বাড়ে, তত গোড়ার দিকটায় চুলের আসল রং দেখা দিতে শুরু করে এবং টাচ আপ করিয়ে নিতে হয়। আর চুল থেকে পার্মানেন্ট হেয়ার কালার তোলার একমাত্র উপায় হল, চুল লম্বা হয়ে গেলে কেটে ফেলা। চুলের ভঙ্গুরতা ঠেকাতে অ্যামোনিয়া ফ্রি হেয়ার কালার লাগান। যাঁদের ত্বক সংবেদনশীল, তাঁরা নতুন ব্র্যান্ড বা নতুন রং লাগানোর আগে অবশ্যই অ্যালার্জির প্যাচ টেস্ট করে নেবেন।

টেম্পোরারি কালার দিয়ে নানা পরীক্ষা করা যায় চুলে

টেম্পোরারি হেয়ার কালার

যাঁরা চুলের রং নিয়ে নানা পরীক্ষানিরীক্ষা করতে চান, তাঁদের পক্ষে সবচেয়ে সহজ পথ টেম্পোরারি হেয়ার কালার। এতে শুধু চুলের বাইরেটাই রং হয়, চুলের করটেক্সে কোনও রং ঢোকে না। শ্যাম্পু করে ফেললেই রং উঠে গিয়ে চুলের আসল রং ফিরে আসে।

টেম্পোরারি হেয়ার কালারের সুবিধে
এই রং চুলে ঝটপট লাগানো যায়, আবার তোলাও যায় ঝটপট। এই রং সম্পূর্ণ অ্যামোনিয়া বিহীন, তাই চুল রুক্ষ ভঙ্গুর হওয়ার ভয়ও নেই। তা ছাড়া টেম্পোরারি কালার বারবার লাগালেও চুলের আসল রঙে কোনও হেরফের হয় না।

টেম্পোরারি হেয়ার কালারের অসুবিধে
খুব কালো ঘন চুল যাঁদের, টেম্পোরারি কালারে তাঁদের খুব একটা লাভ হয় না। তা ছাড়া বারবার লাগানোর ঝামেলা তো আছেই। পাকা চুল ঢাকতেও টেম্পোরারি কালার কোনও কাজের নয়।

অর্গানিক হেয়ার কালার
রাসায়নিকের খপ্পর এড়িয়ে চুল রং করতে চান যাঁরা, তাঁদের জন্য সেরা হল অর্গানিক কালার। হেনা, কফি বা চায়ের মতো প্রাকৃতিক উপাদানের নির্যাস কাজে লাগিয়ে তৈরি হয় এই রং। সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক হওয়ায় অর্গানিক হেয়ার কালার চুলের কোনও ক্ষতি না করেই স্বাভাবিকভাবে রাঙিয়ে তোলে চুল।
রং করা চুলের যত্ন
চুলে যে ধরনের রংই করুন, সব ক্ষেত্রেই দরকার ঠিকঠাক যত্ন। নিয়মিত রং করলে চুল ভঙ্গুর হয়ে যায়, তাই প্রতিবার রং করানোর পর একটা হেয়ার স্পা করাতে পারলে ভালো হয়। তা ছাড়া ভালো শ্যাম্পু আর কন্ডিশনার দিয়ে প্রতিবার চুল ধুতে হবে। চুলের আর্দ্রতা বজায় রাখতে নিয়মিত অয়েল মাসাজ আর ডিপ রুট কন্ডিশনিং করান। ভালো করে যত্ন নিলে চুল সুস্থ ও সুন্দর থাকবে, রঙের বাহারও থাকবে অটুট!