খাগড়াছড়িতে আগাপে কর্তৃক পরিচালিত প্রকল্প উপকারভোগীদের উপহার বিতরণ

প্রতিদিনেরচিত্র ডেস্ক

১০ জুলাই ২০২৩, ০৪:৫৯ পিএম


খাগড়াছড়িতে আগাপে কর্তৃক পরিচালিত প্রকল্প উপকারভোগীদের উপহার বিতরণ

 

পার্বত্য জেলা শিশু উন্নয়ন প্রকল্প-আগাপে, চেলাছড়া সেন্টার কর্তৃক পরিচালিত প্রকল্প উপকারভোগীদের মাঝে উপহার বিতরণ ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

 

আজ সোমবার (১০জুলাই) দুপুরে কম্প্যাশন ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ’র অর্থায়নে  প্রকল্পের চেলাছড়া সেন্টারস্থ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়।

 

আলোচনা সভায় পার্বত্য জেলা শিশু উন্নয়ন প্রকল্প, চেলাছড়া সেন্টারের্ এলসিসি যশোবর্ধন ত্রিপুরার সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন খাগড়াছড়ি সদর উপজেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (অ. দা.) ও সহকারী কমিশনার মোঃ এরফান উদ্দিন। বিশেষ অতিথি ছিলেন পেরাছড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তপন বিকাশ ত্রিপুরা।

 

এতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন পার্বত্য জেলা শিশু উন্নয়ন প্রকল্প, চেলাছড়া সেন্টারের প্রকল্প ব্যবস্থাপক দিলীপ কুমার ত্রিপুরা। এসময় মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টরের মাধ্যমে প্রকল্পের কার্যক্রম সম্পর্কে সংক্ষিপ্তভাবে প্রদর্শন এবং আলোকপাত করেন। এতে তিনি জানান, প্রকল্পের চেলাছড়া পাড়া সেন্টারের আওতাধীন ৩২৫জন শিশু রয়েছে। তাদেরকে বাল্যবিবাহ থেকে রক্ষা করা এবং মানসম্মত শিক্ষাদান আমাদের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ।

 

প্রধান অতিথির বক্তব্যে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ এরফান উদ্দিন বলেন, সরকারি যে প্রতিষ্ঠানগুলো আছে, আমরা সবসময় চেষ্টা করি, সরকারের নির্বাচনী এজেন্ডা বাস্তবায়ন করা। সরকার ২০০৮ সালের নির্বাচনী ইশতেহারের একটি এজেন্ডা ছিলো ডিজিটাল বাংলাদেশ করা। সেটা ইতিমধ্যে হয়ে গেছে। এর ফল আমরা ভোগ করতেছি, করছি। বর্তমান সরকার আগামী ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ করার জন্য কাজ করে যাচ্ছে। স্মার্ট বাংলাদেশ বলতে হাতে শুধু স্মার্ট ফোন থাকলে স্মার্ট হয় না। স্মার্ট বলতে নাগরিক হিসেবে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা সম্পর্কে জানবে, অন্যকে জানাতে সহযোগিতা করতে পারবো, দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন সহ কল্যাণমূলক কার্যক্রমে ভূমিকা রাখবে। তারাই স্মার্ট বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে কাজ করবে। সরকারের পাশাপাশি সাধারণ জনগনকেও বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদান রাখতে হবে।

 

তিনি আরো বলেন, মাঝে মধ্যে দুঃখ লাগে অনেক অভিভাবকদের। তাদের অসচেতনতা অথবা ইচ্ছাতে অল্প বয়সে সন্তানদের বিয়ে দিয়ে দেয়। এটি কিন্তু অপরাধ। মেয়েদের ক্ষেত্রে ১৮বছর এবং ছেলেদের ক্ষেত্রে ২১বছর পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। এর আগে কোনভাবে বিয়ে দেওয়া যাবে না। দিলে প্রশাসন অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নিতে বাধ্য থাকবে। অনেক সময় দেখা যায় দারিদ্র্য বা আর্থিক সংকটের অজুহাত দিয়ে মেয়েদের বোঝা মনে করেন অনেক অভিভাবক। এক্ষেত্রে মায়েরা বেশি, তারা বাল্যবিবাহ বন্ধ করতে গেলে বাধা দিয়ে থাকে। তাই বাল্যবিবাহ না দিয়ে মেয়েসন্তানের পড়াশোনা এগিয়ে নেওয়ার জন্য অভিভাবকদের সচেতন হতে হবে। পরে তিনি সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থাগুলো বিভিন্ন উন্নয়ন কার্যক্রম করায় শুরুতে আগাপে-চেলাছড়া সেন্টারকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান।

 

আলোচনা সভা শেষে প্রকল্পের উপকারভোগী শিশুদের ২৪৩টি স্কুল ব্যাগ, ৩২৫টি ছাতা  ৭২টি খেলনা, ১৫টি ওয়ার্ড্রব, ১৫টিনারিকেল চারা, অভিভাবকদের অর্থনৈতিক স্বাবলম্বী করার জন্য ১৫জনকে শুকরের ছানা তুলে দেন অতিথিরা।পরে এবারের প্রকল্পের উপকারভোগী এসএসসি পরীক্ষার্থীদের জন্য প্রকল্প কর্তৃক প্রথম বারের মতো পরিচালিত বেসিক কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কোর্স আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়।

 

এসময় স্থানীয় ইউপি সদস্য নিতু ত্রিপুরা, নিলাংকুর ত্রিপুরা, বিপ্লব ত্রিপুরা সহ প্রকল্পের আওতায় উপকারভোগী শিশু-অভিভাবকসহ সুধীজনরা অংশ নেন।