ক্লাস্টার বোমা নিয়ে এবার পুতিনের হুঁশিয়ারি
১৭ জুলাই ২০২৩, ১১:২৩ এএম

রাশিয়ার কাস্টার বোমা কি অস্ত্রাগারে সাজিয়ে রাখবো? রুশ সেনাদের বিরুদ্ধে ক্লাস্টার বোমার ব্যবহার হলেই দাঁতভাঙা জবাব দেবে মস্কো। যুক্তরাষ্ট্র এবংপশ্চিমা বিশ্বকে হুঁশিয়ারী পুতিনের।
রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে দেয়া সাক্ষাৎকারে পুতিন এ হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।
রাশিয়ার চোখরাঙানি উপেক্ষা করে ইউক্রেনকে যখন এই নিষিদ্ধ ক্লাস্টার বোমা পাঠালো যুক্তরাষ্ট্র তখন তেলে-বেগুনে জ্বলে উঠে পুতিন বলেন, ‘রুশ ফেডারেশনের কাছে বিভিন্ন ধরনের ক্লাস্টার যুদ্ধাস্ত্রের পর্যাপ্ত মজুত রয়েছে।
প্রেসিডেন্ট পুতিন আরো বলেন, আমরা এর আগে কখনোই এসব যুদ্ধাস্ত্র ব্যবহার করিনি। আমার বাহিনীর উপর আঘাত এলে জবাবে আমরাও এ গুচ্ছবোমা ব্যবহারের অধিকার রাখি। খবর আল জাজিজার।
যুক্তরাষ্ট্রের পাঠানো বিপজ্জনক এ বোমা নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে বিতর্ক চলছে এর মধ্যে পাল্টা হুঁশিয়ারী দিয়ে রাশিয়াও প্রস্তুত জানান দিল পুতিন।
গণবিধ্বংসী হওয়ায় বিশ্বের শতাধিক দেশে নিষিদ্ধ রয়েছে বিতর্কিত ক্লাস্টার বোমার উৎপাদন, মজুত ও ব্যবহার। যদিও যুদ্ধাস্ত্র হিসেবে এসব গুচ্ছ বোমার ব্যবহার বন্ধে বাকি দেশগুলোর মতো আন্তর্জাতিক চুক্তিতে সই করেনি যুক্তরাষ্ট্র, ইউক্রেন ও রাশিয়া।
তবে চলতি মাসেই, যুদ্ধে রাশিয়ার বিরুদ্ধে ব্যবহারের জন্য শেষ পর্যন্ত ইউক্রেনকে বিতর্কিত এই 'নিষিদ্ধ' গুচ্ছ বোমা পাঠানোর ঘোষণা দেয় ওয়াশিংটন । অবশেষে সে বোমা পাঠিয়ে তাদের ঘোষণার বাস্তব রূপ দিল দেশটি।
জুনের প্রথম সপ্তাহে অধিকৃত এলাকা থেকে রুশ সেনাদের হটিয়ে দিতে পাল্টা আক্রমণ শুরু করে ইউক্রেন। তবে তাদের এ অভিযান প্রত্যাশা অনুযায়ী হয়নি।
গত ৭ জুলাই যুক্তরাষ্ট্র ঘোষণা দেয়, ইউক্রেনকে তাদের ৮০ কোটি মার্কিন ডলারের সামরিক সহায়তার অংশ হিসেবে তারা ক্লাস্টার বা গুচ্ছ বোমা পাঠাচ্ছে।
এই খবরে, ১২৩টি দেশে নিষিদ্ধ এ ক্লাস্টার বোমা পাঠানো নিয়ে/ বিশ্বব্যাপী তীব্র সমালোচনা শুরু হয়।
যদিও যুক্তরাষ্ট্র যুক্তি দিয়েছে, প্রায় ১৭ মাস আগে শুরু হওয়া রুশ আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ইউক্রেনের প্রতিরোধ যুদ্ধ যেন দুর্বল হয়ে না পড়ে, তাই তারা কিয়েভকে ক্লাস্টার বোমা পাঠিয়ে সহায়তা করছে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় পেন্টাগন বৃহস্পতিবার (১৩ জুলাই) জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র থেকে ইউক্রেনে ক্লাস্টার বোমা পাঠানো হয়েছে।
লক্ষ্যবস্তুর ওপর নির্ভর করে ক্যানিস্টারগুলো একটি নির্দিষ্ট উচ্চতায় এসে খুলে যায়। এরপর ভেতরে থাকা বোমাগুলো নির্দিষ্ট এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। ভূমির কাছাকাছি অথবা ভূমিতেই যেন বিস্ফোরণ ঘটে, সে লক্ষ্যে বোমা বিস্ফোরণে টাইমার ব্যবহার করা হয়।
বিশ্বের বেশির ভাগ দেশ এ অস্ত্রের ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছে। কনভেনশন অন ক্লাস্টার মিনিশনস (সিসিএম) অস্ত্রের মজুত, উৎপাদন এমনকি স্থানান্তরকেও নিষিদ্ধ করা হয়েছে। সেই কনভেনশনে ১২৩টি দেশ যোগ দিয়েছে। তবে যুক্তরাষ্ট্র, ইউক্রেন ও রাশিয়াসহ ৭১টি দেশ এতে যোগ দেয়নি।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচের মতে, ক্লাস্টার বোমা ব্যবহার করে শত্রুপক্ষের সেনা বা তাদের গাড়িবহরে হামলা করলে তা আন্তর্জাতিক আইনের আওতায় অপরাধ বলে গণ্য হবে না। তবে যদি এ বোমা কোনো বেসামরিককে লক্ষ্য করে ছোড়া হয়, তাহলে সেটি যুদ্ধাপরাধ বলে গণ্য হবে।