ঢাকা, মঙ্গলবার   ৩০ মে ২০২৩,   জ্যৈষ্ঠ ১৬ ১৪৩০

আক্কেলপুরে ছাত্রীকে কু-প্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগে শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত

চৈতন্য চ্যাটার্জী, আক্কেলপুর (জয়পুরহাট)

প্রতিদিনের চিত্র

প্রকাশিত : ১১:৪৬ এএম, ২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ বৃহস্পতিবার

 

য়পুরহাটের আক্কেলপুরে এসএসসি পরীক্ষার্থী এক ছাত্রীকে গোপনে ডেকে নিয়ে কু-প্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে রায়কালী উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক আব্দুস সালাম মানিকের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় বিদ্যালয়ের বিভিন্ন শ্রেণির শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা ওই শিক্ষকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে প্রধান ফটক এবং বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ করে। পরে তাকে বিদ্যালয়ের সকল কার্যক্রম থেকে সাময়িক অব্যহতি এবং অভিযোগটি খতিয়ে দেখার জন্য তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

 

সরেজমিনে ঘটনাস্থলে গিয়ে জানা যায়, উপজেলার রায়কালী উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক আব্দুস সালাম মানিক গত ২৬ জানুয়ারী বৃহস্পতিবার বিদ্যালয় চলাকালীন সময় ওই বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থী এক ছাত্রীকে কৌশলে গোপনে ডেকে নিয়ে কু-প্রস্তাব দেয়।

 

বিষয়টি ওই ছাত্রী বাড়িতে গিয়ে তার মাকে জানায়। শিক্ষার্থী ও তার মা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে বিষয়টি মৌখিকভাবে অভিযোগ করে। ঘটনাটি প্রায় ছয়দিন অতিবাহিত হলেও বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কোন ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও এলাকাবাসী তীব্র ক্ষোভে ফেটে পড়ে। আজ বুধবার সকাল থেকে অভিভাবক ও এলাকাবাসী বিদ্যালয়ে জড়ো হয়ে ওই শিক্ষকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ করতে থাকে।বিষয়টি টের পেয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক মানিক বিদ্যালয় থেকে গোপনে পালিয়ে যায়।

 

খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার তাহমিনা আক্তার, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোঃ ফিরোজ হোসেন এবং থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ না হলে থানা পুলিশের সহায়তায় শিক্ষককে বিদ্যালয়ে হাজির করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার। অভিযুক্ত  শিক্ষককে উপজেলা পরিষদে নিয়ে আসার সময় উত্তেজিত শিক্ষার্থীসহ অভিভাবকরা পথরোধ করে এবং কিছু শিক্ষার্থী বিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে শুয়ে পরে এতে সকলেই বিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে অবরুদ্ধ হয়। অভিযুক্ত ওই শিক্ষককে বিদ্যালয়ের সকল কার্যক্রম থেকে সাময়িক অব্যহতি এবং অভিযোগটি খতিয়ে দেখার জন্য তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

 

ভূক্তভোগী ওই ছাত্রী জানান, ‘ওই স্যার আমাকে বলেন, তোমাকে ফোন দিতে বলেছিলাম ফোন দাওনি কেন? পরে ক্লাস চলাকালীন আমাকে গোপনে ডেকে নিয়ে বলে, একটা কথা বলতে চাই তুমি কথাটা কিভাবে নিবে বুঝতে পারছিনা। তোমাকে আমার খুব ভাল লাগে, তোমার সকল দায়িত্ব আমি নিতে চাই।’

 

সহাকারী প্রধান শিক্ষক আব্দুস সালম মানিক বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ আদৌ সত্য নয়। ষড়যন্ত্রমূলকভাবে আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা চলছে। ’

 

একাধিক শিক্ষার্থী জানায়, ‘এমন শিক্ষকের শিক্ষকতা করার কোন অধিকার নাই। তাকে চূড়ান্তভাবে বরখাস্ত করতে হবে, এটাই আমাদের দাবি।’

 

উপজেলা নির্বাহী অফিসার তাহমিনা আক্তার জানান, ‘ঘটনাটি সঠিকভাবে খতিয়ে দেখার জন্য তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে । অভিযুক্ত ওই শিক্ষককে শ্রেণি এবং বিদ্যালয়ের সকল কার্যক্রম থেকে সাময়িকভাবে বিরত রাখা হয়েছে।’