রাজশাহীতে যুবসমাজ জুয়ায় লিপ্ত হয়ে ধ্বংসের পথে
০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১২:৪৮ পিএম

রাজশাহী মহানগরীর মোড়ে মোড়ে এশিয়া কাপ নিয়ে মেতে উঠেছে জোয়ার আসর। কেউ গোপনে কেউ প্রকাশ্যে টাকা লাগাচ্ছে অনলাইন অ্যাপের মাধ্যমে কে হারবে কে জিতবে । পড়াশোনা ও মাঠে খেলার বয়সে মোবাইলের অ্যাপে জুয়া খেলায় লিপ্ত যুবসমাজ । ১২ বছরের ছেলে থেকে ৬৫ বছরের বৃদ্ধ জড়িত ক্রিকেট ও ফুটবলের জুয়াই।
অনলাইন আ্যপে থাকছে সব রকম অবৈধ জুয়া
ক্রিকেট
ফুটবল
ক্যাসিনো
সব ধরনের কার্ড গেম
সর্বপ্রথম নগরীর বিভিন্ন এলাকায় নির্দিষ্ট এক ব্যক্তি কমিশন নিয়ে বাজি লাগিয়ে দিত মানুষের যাকে বলা হত বুকি অথবা ইসটু পাটি। এই প্রসেসটা জানাজানি হওয়ার পর আরএমপি পুলিশ ও ডিবি পুলিশ অভিযান শুরু করে বুকিদের ধরে। এরপর আসে বিদেশি অ্যাপ bet365 । দেশের টাকা বিদেশে পাচার হয়ে যাচ্ছিল এই অ্যাপের মাধ্যমে জুয়ারীদের হাত ধরে। বাংলাদেশ সরকার bet365 ও কিছু অনলাইন ওয়ালেট বন্ধ করে দেয়। তবুও থামাতে পারে নাই জোয়ারীদের । প্রতিবার আইপিএল ও বিপিএলে সর্বস্বান্ত হয়ে কেউ কেউ আত্মহত্যা পর্যন্ত করে রাজশাহী মহানগরীতে।
এখন অনেক সেলিব্রিটিরাও প্রমোশন করছে বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন অ্যাপ কে। কিন্তু এই অ্যাপের নেশায় লিপ্ত হয়ে সর্বস্বান্ত হয়ে যাচ্ছে যুবসমাজ। জুয়ার টাকা যোগাড় এর জন্য বাড়ছে ছিনতাই , চিটারি ও মাদক ব্যবসা। এই যুয়াই লিপ্ত স্কুল কলেজের ছাত্র থেকে শুরু করে সরকারি ও বেসরকারি চাকরিজীবী পর্যন্ত । এই বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন অ্যাপগুলিতে টাকা ঢোকানোর জন্য কমিশনের মাধ্যমে ডলার কিনত জনগণ। জুয়া জেতার পর সেই ডলার গুলিকে ব্যাংকের মাধ্যমে ফ্রিল্যান্সিং এর নাম করে উত্তোলন করা হতো। সেটা জানার পর সাইবার ক্রাইম ডিপার্টমেন্ট নিয়ম করে দেয় আপনার কাজের প্রমাণ দিয়ে টাকা ব্যাংকের মাধ্যমে উত্তোলন হবে। তারপর সাইবার ক্রাইম এর অভিযানে কিছু বুকি ধরা পড়ার পর এবং ব্যাংকের টাকা উত্তোলন বন্ধ করার পর দমে যায় অনেক অ্যাপ । আর প্রচুর পরিমাণে টাকা ডলার অবস্থায় আটকে যায় অনেক বুকিদের । ছোট ছোট বুকিরা ধরা পড়েনাই সিন্ডিকেটের মূলহোতারা রয়েছে সব সময় ধরাছোঁয়ার বাইরে।
এরপর মূলহোতারা আবার নতুনভাবে বিভিন্ন দেশের অ্যাপগুলি আসে সেগুলি প্রমোশন করায় কিছু সেলিব্রেটির ও সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে। যার মধ্যে ইন্ডিয়ান ও সিঙ্গাপুরের ওয়েবসাইট রয়েছে বেশি। শুরু হয় লেনদেন বিকাশ ,নগদ , রকেট ও উপায় এর মত মোবাইল ওয়ালেটের মাধ্যমে। যেটা এখন চলমান রয়েছে যেটাকে থামাতে পারছে না পুলিশ, রাব ও সাইবার ক্রাইম ডিপার্টমেন্ট। ছোট থেকে বড় সবার ফোনে অ্যাপ গুলির মাধ্যমে চলছে জুয়া। কেউ জিতে মাদকের পিছে নষ্ট করছে টাকা কেউবা হেরে সর্বশ্রান্ত হয়ে পড়েছে। জোয়ার নেশায় বিভিন্ন মিথ্যা কথা বলে পরিবারকে চাপ দিয়ে নয়তো বা এনজিওগুলি থেকে লোন তুলে নষ্ট করছে হাজার হাজার টাকা। এই অ্যাপের সিন্ডিকেটের সাথে জড়িয়ে বিভিন্ন দেশের প্লেয়াররাও টাকার লোভে করে বসছে ম্যাচ ফিক্সিনের মত অপরাধ। এমনকি সোশ্যাল মিডিয়াতে কেউ কেউ ম্যাচ ফিক্সিনের রিপোর্ট দেওয়ার নাম করে হাতিয়ে নিচ্ছে চিটারি করে জনগণের কাছে টাকা। প্রেডিকশন করে মিথ্যা রিপোর্টের কথা বলে জিতার আশা দেখিয়ে হারিয়ে দিচ্ছে জনগণকে ।এইভাবে দেশের টাকাগুলো পাচার হয়ে যাচ্ছে বিদেশে দেশে বাড়ছে অপরাধ। কোথায় যে শেষ হবে জুয়ার এই সিন্ডিকেট।