রাঙামাটিতে সন্ত্রাসীর আগুনে পুড়ল মালবাহী ট্রাক
১০ জুন ২০১৯, ০৩:৪৩ পিএম

রাঙামাটির বাঘাইছড়িতে চাঁদার দাবিতে একটি মালবাহী ট্রাক আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা। সোমবার বেলা ১০টার দিকে বাঘাইছড়ি উপজেলার মারিশ্যা-দীঘীনালা সংযোগ সড়কে এ ঘটনা ঘটে। এসময় ট্রাকের চালকেও মারধর করে ওই সন্ত্রাসীরা। এঘটনায় স্থানীয় ব্যবসায়ীদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে।
এতে ১০ লাখ টাকার মুদি দোকানের পণ্যসহ প্রায় ২৫ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়। এ ঘটনার পরপরই বাঘাইহাট জোন ও হাজাছড়া ৫৪ বিজিবির টহলদলের সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে চালক ও হেলপারকে উদ্ধার করে আগুন নেভানোর চেষ্টা চালায়। পরে দীঘিনালা ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
এদিকে এ ঘটনায় অভিযোগের তীর রয়েছে প্রসিত খীসার নেতৃত্বাধীন ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেট্রিক ফ্রন্টের (ইউপিডিএফ) দিকে।
আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত ট্রাকের মালিক ও বাঘাইছড়ি পৌরসভার সাবেক কমিশনার মো. আলী হোসেন ইউপিডিএফকে দায়ী করে বলেন, আমার গাড়িতে পাহাড়ের আঞ্চলিক দল ইউপিডিএফ আগুন দিয়েছে। আগুন দেয়ার আগে শুকনাছড়া নামক জায়গায় ১ হাজার টাকা চাঁদাও নিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আমি আওয়ামী লীগের রাজনীতি করি, এটাই আমার বড় অপরাদ। এজন্য ইউপিডিএফ আমার গাড়িতে আগুন দিয়েছে। না হয় দুইটি গাড়ি একইসঙ্গে আসছিল। একটি ছেড়ে দিয়ে আমার গাড়িতে কেন আগুন দেবে?
মারিশ্যা বাজারের ব্যবসায়ী ও মালামাল পরিবহনকারী সাহাব উদ্দিন বলেন, দীর্ঘদিন যাবত বাজারের ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে মোটা অংকের চাঁদা দাবি করে আসছিল ইউপিডিএফ। কিন্তু সময়মতো চাঁদা না দেয়ায় রাস্তায় গাড়ি থামিয়ে অতিরিক্ত চাঁদা আদায়সহ নানা রকম হয়রানি করত তারা। কিছুদিন আগেও গাড়িতে ঢিল ছুড়ে গ্লাস ভেঙে দেয় এবং আজ সকালে গাড়িতে আগুন দেয়।
রাঙামাটি বাঘাইছড়ি উপজেলার থানার কর্মকর্তা ওসি এম এ মঞ্জুরুল আলম এ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে ট্রাক চালক ও হেলপারকে উদ্ধার করে ৫৪ বিজিবির । কিন্তু ৫৪ বিজিবির আসার আগেই ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায় সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা। পরে খাগড়াছড়ির দিঘীনালা ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট এসে ট্রাকের আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
অন্যদিকে এ ঘটনার জন্য তীব্র নিন্দা জানিয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রাম বাঙালী সংগঠনের নেতারা। সংগঠনের এক নেতা ও এ্যাডভোকেট মো. আবছার আলী বলেন, পার্বত্যাঞ্চলে উপজাতি নামধারী আঞ্চলিক সংগঠনগুলোর কাছে মানুষ জিম্মি হয়ে পরেছে। ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরাও চাঁদা ছাড়া ব্যবসা করতে পারছে না। চাঁদা না পেলে তারা অগ্নিসংযোগ খুন, গুম, হানাহানি করে চলেছে। চিহ্নিত সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে দ্রুত প্রশাসনকে ব্যবস্তা গ্রহণ করতে হবে। তা না হয় তাদের দৌরাত্ম আরও বৃদ্ধি পাবে।