রাণীশংকৈলে ৪র্থ পর্যায়ের ১৬০টি গৃহের সকল কাজ সম্পন্ন, উদ্বোধনের অপেক্ষায়
১৯ মার্চ ২০২৩, ০৩:৩৬ পিএম

ছবি- প্রতিদিনেরচিত্র বিডি।
আশ্রয়ণের অধিকার, শেখ হাসিনার উপহার' এই প্রতিপাদ্যকে সামনে নিয়ে আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় দেশের ভূমিহীন ও গৃহহীন মুক্ত কার্যক্রমের অংশ হিসাবে আগামী ২২ মার্চ সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একযোগে সারাদেশের আশ্রয়ণ প্রকল্পের তৃতীয় পর্যায়ের অবশিষ্ট ও চতুর্থ পর্যায়সহ ৫৭ হাজার ৭৩৭টি গৃহ হস্তান্তর করবে। এরই অংশ হিসাবে ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলায় চতুর্থ ধাপে আরো ১৬০ টি পরিবারকে ভূমিহীন ও গৃহহীন মুক্ত ঘোষনা করবেন প্রধানমন্ত্রী।
এরই মধ্যে উপজেলা প্রশাসনের নিবিড় তদারকি ও পিআইও অফিসের নিরলস পরিশ্রমের মাধ্যমে ওই ১৬০টি ঘরের সকল প্রকার প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। শুধুমাত্র উদ্বোধনের আপেক্ষা। অসহায়, হতদরিদ্র ও ছিন্নমূল ১৬০ জন তাদের কাঙ্খিত গৃহ পেতে যাচ্ছে, পরের ঘরে থাকার বেদনা ভুলে নিজের জায়গায় থাকতে পেরে আনন্দে আত্মহারা ওইসব পরিবারগুলো এজন্য মহান আল্লাহর শুকরিয়া জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মানবিক এ উদ্যোগের জন্য তারা ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান।
সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, সালমা বেগম তার নিজের কোন জায়গা জমি নাই। পরের বাড়িতে গৃহ পরিচারিকার কাজ করে কোন রকমে সংসার চালান। যে টাকা তিনি বেতন পান তা দিয়ে সংসার চলে না। এ সমস্যায় হিমশিম খাচ্ছিলেন তিনি। এরই মধ্যে তিনি খবর পান আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় সরকার দেশের ভূমিহীন ও গৃহহীনদের জায়গাসহ ঘর দিবেন। তিনিও আবেদন করেন। কোনরকম ঝামেলা ও খরচ ছাড়াই পেয়ে যান জায়গাসহ ঘর।
এতে আনন্দে আত্মহারা তিনি। অনেক অনেক খুশি হয়েছি আমি। মাথার উপর একটু আশ্রয় পেয়েছি নিজের ঘরে থাকতে পারবো ভাবতেই অন্যরকম আনন্দ লাগছে। ধন্যবাদ শেখ হাসিনা। এমনটিই বলছিলেন সালমা বেগম। শুধু সালমাই না।
উপজেলা প্রশাসন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক নেতাদের মাধ্যমে তথ্য নিয়ে দেখেছেন যেন একটি পরিবার ও ভূমিমহীন ও গৃহহীন পরিবার না থাকে। এই লক্ষ্যে কাজ করেছেন ঠাকুরগাঁও জেলার রাণীশংকৈল উপজেলা প্রশাসন। উপজেলায় যারা ভূমিহীন ছিল এমন পরিবারকে তালিকা করে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের একটি গৃহ ও দুই শতংশ জমি তাদের নামে রেজিস্ট্রি করে দিয়েছেন উপজেলা প্রশাসন।
এ বিষয়ে ধর্মগড় ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বলেন, "আমার ইউনিয়নের মোট ৫০ টি ভূমিহীন পরিবার ছিল। তারা প্রত্যেকে আশ্রয়ন প্রকল্পের একটি করে গৃহ ও ২ শতক জমি পেয়ে গেছেন। তিনি আরো বলেন আমার জানা মতে আমার ইউনিয়নে ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবার আর নেই। যদি থেকে থাকে তাহলে তারও ঘর পাবে"।
রাণীশংকৈল উপজেলা নির্বাহী অফিসার সোহেল সুলতান জুলকার নাইন কবির স্টিভ জানান, মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে “বাংলাদেশের একজন মানুষও ভুমিহীন বা গৃহহীন থাকবে না” প্রধানমন্ত্রীর এ নির্দেশনা বাস্তবায়নে দেশের সকল ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবার পুনর্বাসন কার্যক্রমের অংশ হিসেবে রাণীশংকৈল উপজেলায় ইতোমধ্যে ১৩৬৮ টি গৃহ নির্মাণ করা হয়েছে। চতুর্থ পর্যায়ের ১৬০টি পরিবারকে পাকা গৃহ নির্মাণ করে দেয়া হয়েছে।
যা আগামী ২২ মার্চ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী হস্তান্তর করবে। প্রতিটি গৃহে দুটি বেডরুম, একটি বারান্দা, একটি রান্নাঘর ও একটি টয়লেট রয়েছে প্রতিটি ঘরে নির্মাণ ব্যয় ২ লক্ষ ৮৪ হাজার ৫শ টাকা। প্রতিটি গৃহে পৃথক মিটারসহ বিদ্যুৎ সংযোগ প্রদান করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, খুবই সচ্ছতার সাথে উপজেলা প্রশাসন প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে। উপজেলা প্রশাসন, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক নেতাদের মাধ্যমে তথ্য নিয়ে এ উপজেলাকে ভূমিহীন ও গৃহহীন মুক্ত করার কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে।