কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হলেও দুর্ভোগে বানভাসিরা

প্রতিদিনেরচিত্র ডেস্ক

১৮ জুলাই ২০২৩, ০৩:০৪ পিএম


কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হলেও দুর্ভোগে বানভাসিরা

 

দুধকুমার, গঙ্গাধর, ব্রহ্মপুত্র, ধরলা ও তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার নিচে নেমে কুড়িগ্রামের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। তবে দুর্ভোগ কমেনি বানভাসি মানুষের। চরাঞ্চলসহ নদ-নদী অববাহিকার নিচু ঘর-বাড়ির চারিদিকে পানি জমে রয়েছে। খাদ্য, বিশুদ্ধ খাবার পানি, শৌচাগার এবং গোখাদ্যের সঙ্কট দেখা দিয়েছে। বন্যাকবলিত এলাকার অনেকের ঘরবাড়ি থেকে পানি নেমে গেলেও কর্দমাক্ত থাকাসহ চরাঞ্চলের গ্রামীণ রাস্তাঘাট ভেঙে গেছে। এতে যাতায়াতে ভোগান্তি বেড়েছে মানুষজনের। আর যত বন্যার পানি নামছে ততই দৃশ্যমান হচ্ছে ক্ষয়ক্ষতির চিহৃ। সরকারের নেয়া নানা উদ্যোগে কুড়িগ্রাম জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের সমন্বয়ে সার্বক্ষণিকভাবে দুর্গম চরাঞ্চলে ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে বলে জানিয়েছেন কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক।

 

সরেজমিনে কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী, ভুরুঙ্গামারী, ফুলবাড়ী, চিলমারী, উলিপুর, কুড়িগ্রাম সদরে ৪ শতাধিক চরাঞ্চলের মধ্যে অধিকাংশ দুর্গম চরাঞ্চলের পানি নামতে শুরু করায় বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। তবে দুর্ভোগ কমেনি বানভাসি মানুষের। নাগেশ্বরীর বেরুবাড়ী ইউনিয়নের দুধকুমার নদের চর রহমানেরকুটি, সবুজপাড়া চরে দেখা যায় কিছু কিছু বাড়ি থেকে পানি নেমে গেলেও অনেক বাড়ির চারিদিকে পানি জমে রয়েছে। বেরুবাড়ী ইউনিয়নের ৫টি ব্রীজ ভেঙে যাওয়াসহ নাগেশ্বরী, ভুরুঙ্গামারী ও ফুলবাড়ী উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের পিআইও দপ্তরের গ্রামীণ কাঁচা রাস্তাঘাট ও এলজিইডি, সড়ক জনপদের পাকা রাস্তার ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বিভিন্ন পোটল, ঢেরস, কুমড়া, বেগুনসহ বিভিন্ন ক্ষেতগুলো পানিতে তলিয়ে থাকায় তরিতরকারি জোটাতে পারছেন না বানভাসিরা। গবাদি পশুর তীব্র খাদ্য সঙ্কট চলছে।

 

নুনখাওয়ার কাপনা, ফকিগঞ্জ, ব্যাপারীরচরের চরের বানভাসি মনজুরুল হক, জহির উদ্দিন বলেন, নিজেদের ঠিক মতো খাবার জোটে না ছাগলগুলাক কি খাওয়াই। তাই নৌকায় ছাগল তুলি পানিত ভাসি থাকা পাটক্ষেতে নিয়্যা যাই। তাকে খাওয়াই। গ্রামের অনেক ঘর থাকি পানি নামলেও বাড়ির চাইরোপাশে পানি জমে আছে।

 

ভুরুঙ্গামারীর ধাউরারকুটি চরের আজিজুল হক, মিজানুর রহমান, জাহিদুল হক জানান, বন্যার পানি নামার সাথে সাথে মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে। আর দুর্গম চরাঞ্চলের অবস্থা খুবই খারাপ। বন্যার পানিতে পাট ক্ষেত ডুবে ছিল। এখন পানি কমে যাওয়ার পর দেখা যাচ্ছে বালু পড়ে অনেক পাটক্ষেত নষ্ট হয়ে গেছে।

 

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, দুধকুমর, ব্রহ্মপুত্র, গঙ্গাধর, ধরলা ও তিস্তা নদের পানি বিপৎসীমার নিচে নেমে যাওয়ায় কুড়িগ্রামের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। বন্যার পানি নেমে যাওয়ার সাথে সাথে দৃশ্যমান হচ্ছে ক্ষয়ক্ষতির চিহৃ।

 

কুড়িগ্রাম সিভিল সার্জন ডা. মনজুর এ মুর্শেদ জানান, বন্যার্তদের রোগ প্রতিরোধে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মাধ্যমে মেডিক্যাল টিম গঠন করে ব্যবস্থা নিচ্ছেন।

 

কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাঈদুল আরীফ জানান, চলতি বন্যায় প্রশাসন থেকে এখন পর্যন্ত ত্রাণ কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। পানি বাহির রোগ প্রতিরোধে মেডিক্যাল টিম গঠনসহ সব ধরণের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।